
সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ : ক্রেতারা পছন্দের পশু খুঁজতে ভিড় করছেন হাটে
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় জমে উঠেছে কোরবানির পশু কেনাবেচা। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যস্ততায় মুখরিত চারপাশ। হাট-বাজারগুলোতে দেশীয় খামারিদের লালন-পালনে বড় হয়ে ওঠা গরু, ছাগল ও ভেড়া নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে ক্রেতাসাধারণের মাঝে।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে জানা গেছে, এ বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলায় মোট ১৪,২২০টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ৮৬০১টি এবং ছাগল ও ভেড়া ৫৬১৯টি। ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন। এরই মধ্যে ক্রেতারা পছন্দের পশু খুঁজতে ভিড় করছেন হাটে। বরাবরের মতো ঈদের আগের শেষ সপ্তাহে হাটে ভিড় বেশি থাকে। সে মোতাবেক এবারও হাটে এসে পশু কিনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতারা।
সাটুরিয়া উপজেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট হলো হরগজ ইউনিয়নে অবস্থিত হরগজ গরুর হাট। হাটে দিনভর চলছে গরু ও ছাগলের দরদাম, যাচাই-বাছাই এবং বেচাকেনা। এই হাটটি সাধারণত বসে প্রতি সপ্তাহের রবিবার। তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঈদের আগে পুরো সপ্তাহেই বসে হাট ।
রবিবার দুপুরের দিকে সরেজমিন হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার গরু ও ছাগল আনা হয়েছে মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, নওগাঁ ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। হাটে স্থানীয় খামারিদের পাশাপাশি এসেছে বড় বড় খামারের উন্নত জাতের পশুও। হাটে দেখা যায়, একটি মাঝারি আকৃতির গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। গরু বিক্রেতা মিজানুর রহমান জানান, এই গরু তিনি গত এক বছর ধরে তার খামারে লালন-পালন করেছেন। ক্রেতারা গরুর স্বাস্থ্য দেখে সন্তুষ্ট হচ্ছেন এবং দরদামও করছেন। অনেক খামারি আবার পশু সরাসরি খামার থেকেই বিক্রি করছেন।
পশু কিনতে আসা ক্রেতাদের কেউ কেউ বলছেন, এ বছর দাম তুলনামূলক বেশি। সাটুরিয়া সদরের বাসিন্দা রাইসুল ইসলাম বলেন, গত বছর যে গরু ৯০-৯৫ হাজারে পেয়েছিলাম, এবার তা ১ লাখেরও ওপরে দাম চাচ্ছে। টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলাধীন পাকুটিয়া থেকে গরু কিনতে আসা ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, হাটে পছন্দসই গরু পাওয়া যাচ্ছে, তবে দামে একটু বেশিই বলতে হয়। তবু চেষ্টা করছি দরদাম করে একটা ভালো গরু নিতে।
হাটে উপস্থিত একাধিক ক্রেতা জানান, খামার থেকে গরু কিনলে বাড়তি হাসিল দিতে হয় না, আবার দালালের ঝামেলাও থাকে না। তবে হাটে নানা জাতের পশু একত্রে থাকায় তুলনা করার সুযোগ বেশি থাকে বলে হাটে এসেছেন বলে জানান তারা।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইমরান হোসেন বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরেই কোরবানির ঈদ এলে সাটুরিয়ার নামটি আসে। দেশের সবচেয়ে বেশি ওজনের পশু লালন-পালন করে এ রেকর্ড করেছেন এই উপজেলার খামারিরা। তবে এ বছর বড় পশু না থাকলেও ঈদ সামনে রেখে খামারিরা প্রস্তুত করেছে তাদের পশুগুলো। এ বছর পশুর সরবরাহ ভালো হওয়ায় বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে তিনি আশা করছেন।
পশুর হাটগুলোতে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। সাটুরিয়া থানার ওসি শাহিনুল ইসলাম বলেন, পশুর হাটে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা হবে না। সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হোসেন বলেন, উপজেলার প্রতিটি হাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল রয়েছে। এ ছাড়া পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাটে ভেটেরিনারি টিম রাখা হয়েছে।
প্যানেল