ছবি: সংগৃহীত
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এইচআইভি-এইডসে আক্রান্ত এক গর্ভবতী নারীর সিজারিয়ান অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়ে অপারেশনটি চলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। যশোর অফিসের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও গাইনি বিভাগের চিকিৎসকদের সহযোগিতায় ওই নারী একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ রয়েছেন এবং হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের একটি ক্যাবিনে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এর আগে দ্বিধা ও বিভ্রান্তির কারণে অপারেশন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত তা সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এটি যশোর জেনারেল হাসপাতালে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো এইচআইভি-আক্রান্ত গর্ভবতী নারীর সফল সিজারিয়ান অপারেশন।
অপারেশন শেষে গাইনি বিভাগের অপারেশন থিয়েটার জীবাণুমুক্ত করার জন্য ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে জরুরি প্রসূতি অপারেশন সাময়িকভাবে জেনারেল সার্জারি থিয়েটারে পরিচালিত হবে।
হাসপাতালের প্রশাসনিক ও গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়াসমিন আক্তার ও এনেস্থেসিওলজিস্ট ডা. জাফর ইকবালের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি মেডিকেল টিম এই অপারেশনে অংশ নেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী অপারেশন শেষে মা ও নবজাতককে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের একটি কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
ডা. ইয়াসমিন আক্তার জানান, অপারেশনে ব্যবহৃত সব ইনস্ট্রুমেন্ট, মাফ, গজ, ব্যান্ডেজসহ অন্যান্য সামগ্রী আগুনে পুড়িয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া থিয়েটারটি আগামী ৪৮ ঘণ্টা জীবাণুমুক্ত করার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি জানান, প্রসূতি নারী ৩৬ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন এবং অপারেশনের আগে সামাজিক ও শারীরিক নানা জটিলতা ছিল। সকল প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে সফল অপারেশন সম্ভব হওয়ায় তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের জন্য পৃথক অপারেশন থিয়েটার ও আইসোলেশন সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হুসাইন শাফায়াত জানান, রোগী ও তার পরিবারের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, একজন নারী স্বামীর মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন এবং অন্যজন চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এনজিওকর্মীরা পরিবারের অন্য সদস্যদের এইচআইভি পরীক্ষা করে দেখছেন। নবজাতকের শরীরে এইডসের আলামত না পাওয়া গেলে তাকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
আসিফ
