ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বান্দরবানে পাহাড় ও সড়কে ব্যাপক ধস, ভারী বৃষ্টি অব্যাহত

মোহাম্মদ আবদুর রহিম, বান্দরবান

প্রকাশিত: ২০:০১, ১ জুন ২০২৫

বান্দরবানে পাহাড় ও সড়কে ব্যাপক ধস, ভারী বৃষ্টি অব্যাহত

ছবি: বান্দরবান-লামা সংযোগ সড়কের টংকাবতী ইউনিয়নের ২৩ কিলোমিটার পয়েন্টে সড়ক ধসে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

বান্দরবানে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে জেলার সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলার সংযোগ সড়কগুলোতে পাহাড় ও সড়ক ধসের ঘটনা বাড়ছে। বিশেষ করে রুমা-ওয়াইজং সড়কের দাওলিয়ান পাড়া এলাকাসহ একাধিক স্থানে পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ায় স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।

এছাড়া জেলার রোয়াংছড়ি ও থানচি সড়কে যাত্রীরা অতিমাত্রায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। টানা বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দারা চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।

বান্দরবানের আবহাওয়ার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মণ্ডল জানান, রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বিকাল ৬টা পর্যন্তও জেলার বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত ছিল বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনা এড়াতে সাতটি উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিশেষ করে যারা পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন, তাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে, ভারী বৃষ্টির ফলে সড়ক ধসে জেলার সুয়ালক মাঝেরপাড়া হয়ে লামা উপজেলার সংযোগ সড়কের টংকাবতী ইউনিয়নের রমজুপাড়া এলাকার ২৩ কিলোমিটার পয়েন্টে এখনও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

অপরদিকে, শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বৃষ্টিপাত কম থাকায় সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নেমে এলেও রবিবার ভোররাত থেকে ফের টানা মুষলধারে বৃষ্টির কারণে নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চলে পাহাড়ি ঢলে প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তবে জেলা প্রশাসন শুরু থেকেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক রয়েছে। পাহাড় ধস ও সম্ভাব্য বন্যার আশঙ্কায় জেলার সদর ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ২২০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ বসতবাড়ির বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”

নুসরাত

×