
দৈনিক জনকণ্ঠ
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় আয়মন নদীর ওপর নির্মিত গহুর মোল্লার ব্রিজ ধসে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে দুইপাড়ের মানুষের। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আয়মন নদীতে পানির চাপ বৃদ্ধি পাশাপাশি ব্রিজের দু’পাশের মাটি সরে গেলে পাটাতন ধসে পড়ে।
এতে শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুই পাড়ের ৬ গ্রামের মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে নানা ভোগান্তি পোহাতে পরেছে। দ্রুত ব্রিজটি মেরামত করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের কথা জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খেরুয়াজানী ইউনিয়নের পলশা ভিটিবাড়ী গ্রামের গহুর মোল্লার ব্রিজটি ২০০১ সালের দিকে আয়মন নদীর ওপর নির্মাণ করে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
সম্প্রতি ব্রিজটি সংরক্ষণ না করেই অপরিকল্পিতভাবে আয়মন নদীর খনন কাজ করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে ব্রিজের গোড়ার মাটি সরে গিয়ে ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে।
যার ফলে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে নদীর পানির স্রুতের ধাক্কায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিমিষেই ব্রিজটি চোখের সামনে ভেঙে পড়ে। দ্রুত ব্রিজটি পুনঃনির্মাণ না করা গেলে দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে।
স্থানীয় বাসিন্দা গরু ব্যবসায়ী হীরা মিয়া বলেন, এই ব্রিজটি দিয়ে স্কুল ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের চলাচল। হঠাৎ করে সকালে ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় ৬ টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি।
ফয়সাল মিয়া নামে আরেক জন বাসিন্দা বলেন, ব্রিজটি পলশা গহুর মোল্লা ব্রিজ নামে পরিচিত। অপরিকল্পিত ভাবে আয়মন নদী খননের কারণেই ব্রিজটি চোখের সামনে ভেঙে পড়তে দেখলাম এই ব্রিজ দিয়ে ময়মনসিংহ সদর সহ প্রতি দিন প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ চলাচল করে আমরা দ্রুত ব্রিজটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের ভোগান্তি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় পণ্য পরিবহণে শুক্রবার সকাল থেকে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে আজহারুল ইসলাম বলেন, কয়েক গ্রামের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে আয়মন নদীর ওপর ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ব্রিজটির কারণে এই অঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে অনেকটাই স্বাবলম্বী। হঠাৎ করে ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদের মাথায় হাত পড়েছে। দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
মুক্তাগাছা উপজেলা প্রকৌশলী মো.রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রিজটি আমরাই নির্মাণ করেছিলাম। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিত ভাবে নদী খনন করার কারণে ব্রিজটি ভেঙে গেছে। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাশের সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হবে। পরে পুনরায় ব্রিজটি করার জন্য মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করব।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে শুনেছি। ইতিমধ্যে ব্রিজটি পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ভাবছি কিন্তু টানা বৃষ্টিতে এখনো যেতে পারিনি। পরিদর্শন শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আখলাক উল জামিল বলেন, আমরা নদ খনন করার পূর্বে উপজেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি ব্রিজ সংরক্ষণ করার জন্য। ব্রিজের দুইপাশে ৩০ মিটারের মধ্যে আমরা কোনো খনন কাজ করিনি। এখন যদি ব্রিজ ভেঙে পড়ে তাহলে দায় কেন আমরা নেব।
হ্যাপী