
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বিরামহীন বর্ষণের ফলে শুক্রবার (৩০ মে) পর্যন্ত চন্দ্রদ্বীপ, নাজিরপুর, ধুলিয়া, কেশবপুর, কাছিপাড়া, কালাইয়া ও বগা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
বৃষ্টির পাশাপাশি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবনের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কৃষি, ব্যবসা, শিক্ষা ও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে ভাটা শুরু হলেও বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ি, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো এখনও জলমগ্ন। এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
পানি ঢুকে পড়ায় অনেক পরিবার রান্না-বান্না পর্যন্ত করতে পারছে না। উঠানে গবাদিপশু বেঁধে রাখাও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।
নাজিরপুর ইউনিয়নের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, “বৃষ্টির পানি আর নদীর জোয়ার মিলে সব জমি পানির নিচে চলে গেছে। বীজতলা, লাউ, ঢেঁড়স, পুঁইশাক সব শেষ। এখন যদি সরকারি সহায়তা না পাই, তাহলে চাষাবাদ চালানো সম্ভব হবে না।”
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের রুমানা বেগম বলেন, “ঘরের ভিতরে পানি উঠেছে। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি। রান্না করা যাচ্ছে না। গরুগুলাও সমস্যায় আছে।”
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধুলিয়া, কাছিপাড়া ও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের আউশ ধান ও আগাম সবজির ক্ষেত। কৃষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে উৎপাদন খরচ তো উঠবে না-ই, বরং লোকসানে পড়তে হচ্ছে।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, “ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার তালিকা সংগ্রহ চলছে। স্থানীয় প্রশাসন মাঠে রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আমি ঢাকায় সরকারি প্রশিক্ষণে থাকলেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং খুব দ্রুতই সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।”
মিমিয়া