ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গাজীপুরের প্রাচীন মোগর খাল পুনরুদ্ধার ও খনন কার্যক্রম শুরু, জলাবদ্ধতা নিরসনে জিসিসি প্রশাসকের অঙ্গীকার

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর

প্রকাশিত: ২০:৫২, ৩০ মে ২০২৫; আপডেট: ২০:৫৫, ৩০ মে ২০২৫

গাজীপুরের প্রাচীন মোগর খাল পুনরুদ্ধার ও খনন কার্যক্রম শুরু, জলাবদ্ধতা নিরসনে জিসিসি প্রশাসকের অঙ্গীকার

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের দীর্ঘতম ও ঐতিহ্যবাহী মোগর খাল পুনরুদ্ধার এবং খনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) দিনভর বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে খালটির বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। প্রায় তিন কিলোমিটার কাঁদাভরা পথ পায়ে হেঁটে খনন ও ময়লা অপসারণের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন তিনি।

ভোগড়া বাইপাস থেকে শুরু করে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত খালের বর্তমান অবস্থা এবং পানি নিষ্কাশনের সক্ষমতা যাচাই করেন তিনি। এ সময় বৃষ্টিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জমে থাকা পানির কারণ ও সমাধান খুঁজে দেখেন।

প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, “সেনাবাহিনীর সহায়তায় খাল থেকে ময়লা অপসারণ শুরু হয়েছে। তবে ভেকু পৌঁছাতে না পারায় কিছু অংশে খনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে খালের প্রস্থ বৃদ্ধি, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও স্থায়ী সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই খাল শুধুই পানি চলাচলের পথ নয়, বরং নগরবাসীর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রধান মাধ্যম। খাল পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখা গেছে ভেতরে লেপ, তোশক, বালিশ, পলিথিন এমনকি গৃহস্থালী সামগ্রীর স্তূপ জমে আছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। নগরবাসীকে আরও সচেতন হতে হবে।”

নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “খালের পাশে ময়লা না ফেলুন, আমাদের পাশে থাকুন। তাহলে গাজীপুর একদিন পরিচ্ছন্ন, আধুনিক ও বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তরিত হবে।”

চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার কারণ উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেন, “বিআরটি প্রকল্পের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ নকশা ও ভুল বাস্তবায়নেই এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন নিজস্ব উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে সমাধানের চেষ্টা করছে।”

স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন ও সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, ঐতিহাসিক মোগর খালটি গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া থেকে শুরু হয়ে পূর্ব চান্দনা, খাইলকুর, হায়দারাবাদ হয়ে নিমতলী হয়ে টঙ্গী নদীতে মিশেছে। এটি ম্যাপে ‘গাছা খাল’ নামে চিহ্নিত।

অবৈধ দখল ও কলকারখানার রাসায়নিক বর্জ্যের কারণে খালটি তার স্বাভাবিক কার্যকারিতা হারাচ্ছিল। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় খালের সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, খনন ও ময়লা অপসারণ কার্যক্রম শুরু করেছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন।

পরিদর্শনকালে প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের সচিব আমিন আল পারভেজ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা সোহেল রানা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর রশিদ, সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ হোসেন, মাইদুল ইসলাম ও মাহমুদা আক্তার।

এছাড়াও কাজ বাস্তবায়নে সহায়তাদানকারী সেনাবাহিনীর সদস্য ও অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মিমিয়া

×