
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় কোরবানির হাটের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার গরু, যেগুলো এসেছে উপজেলার ২,৫০০টি খামার থেকে। কিন্তু এ আনন্দঘন প্রস্তুতির মাঝেই হানা দিয়েছে ভয়াবহ ভাইরাস লাম্ফি স্কীন ডিজিজ বা এলএসডি। ফলে গরু খামারিদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বেশ কিছু খামারে গরুর শরীরে ফোলা, গোটা ও পচনের মতো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আক্রান্ত গরুগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। খামারিরা জানিয়েছেন, তারা পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এলএসডি প্রতিরোধক টিকা দিচ্ছেন এবং গরুদের আলাদা করে বিশেষ যত্ন নিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, লাম্পি স্কীন ডিজিজ (Lumpy Skin Disease) একধরনের ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত মশা ও মাছির মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু এটি ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট, তাই এর নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। একমাত্র প্রতিরোধই হলো লাম্পি টিকা দেওয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
কসবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তারেক মাহমুদ বলেন, “এই ভাইরাসটি প্রতিরোধে আমরা প্রতিটি খামারে গিয়ে সচেতনতামূলক পরামর্শ দিচ্ছি। খামার পরিষ্কার রাখা, লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত টিকা দেওয়া এবং আক্রান্ত গরুকে আলাদা করে রাখা জরুরি।”
এদিকে খামারিরা অভিযোগ করছেন, সরকারিভাবে এই ভাইরাস প্রতিরোধে পর্যাপ্ত টিকা সরবরাহ না থাকায় তারা বাধ্য হচ্ছেন বেসরকারিভাবে ফার্মেসি থেকে টিকা সংগ্রহ করতে। এতে খরচও বেড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় খামারি তজু মেম্বার বলেন, “প্রতি বছর এই সময়ে ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে আমরা পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যত্ন নিচ্ছি, যেন কোরবানির হাটে সুস্থ গরু তুলতে পারি।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রোগকে হালকাভাবে নিলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে কসবার গরু শিল্প। তাই এখনই দরকার সরকার ও খামারিদের সমন্বয়ে একটি জরুরি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।
কোরবানির আগে এই ভাইরাসজনিত আতঙ্ক পুরো খামারি সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে। ঈদের হাট সফল করতে ও খামারিদের উৎসাহিত রাখতে প্রয়োজন যথাযথ টিকা সরবরাহ, মনিটরিং ও চিকিৎসা সহযোগিতা। তা না হলে কোরবানির গরুর বাজারেও এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মিমিয়া