ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঘোড়ায় চড়ে কনের বাড়িতে বর, দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড়

এন কে বি নয়ন, বোয়ালমারী, ফরিদপুর

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ১৬ মে ২০২৫

ঘোড়ায় চড়ে কনের বাড়িতে বর, দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড়

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পুরোনো সেই রীতিতে বর বেশে ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে সেরেছেন এক তরুণ। বিষয়টি এলাকাবাসীর নজর কেড়েছে। এমন দৃশ্য দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

শুক্রবার (১৬ মে) দুপুরে কনের বাড়িতে ঘোড়ায় চড়ে হাজির হন বর বোরহান চৌধুরী। এ দৃশ্য দেখতে সেখানে ভিড় জমান উৎসুক মানুষ। ঘোড়ার পাশাপাশি মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসে অন্তত ১২০ জন বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে যান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন আর ঘোড়া হাঁকিয়ে রাজপুত্রের ছুটে চলার দৃশ্য দেখা মেলে না। অথচ এক সময় পালকি, গরু বা ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়ে বাড়ি কিংবা শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার প্রচলন ছিল অহরহ। কালের বিবর্তনে এ দৃশ্য যেন বিলুপ্ত।  

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পৌরসদরের ছোলনা গ্রামের মরহুম আমিরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে বোরহান চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হয় একই উপজেলার কুশোডাঙ্গা গ্রামের মো: ফারুক শেখের মেয়ে ফারজানা রহমান তিম্মার। বর বোরহান চৌধুরীরর বাড়ি থেকে কনে ফারজানার বাড়ি প্রায় দেড় থেকে দুই কিলোমিটারের পথ। পুরো পথ ঘোড়ার পিঠে চড়ে কনের বাড়িতে পৌঁছান বোরহান। ঘোড়ার পিঠে চড়ে বর আসার দৃশ্য দেখতে রাস্তার দুই পাশে জড়ো হন উৎসুক জনতা। কনের বাড়ির লোকজন তাকে সাদরে গ্রহণ করেন। 

বোরহান চৌধুরীর ফুফাতো ভাই শরিফুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, “মামাতো ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে আত্মীয় স্বজনের উদ্যোগে এমন আয়োজন করা হয়েছে। ব্যতিক্রমী আয়োজনে উভয় পরিবারসহ স্থানীয়রা বেশ খুশি।”

কনের বাবা মো: ফারুক শেখ বলেন, “হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য গোড়ায় চড়ে বর আসার দৃশ্যটি দেখে সবাই খুশি ও আনন্দিত। এ দৃশ্যটি একটি ভিন্নধর্মী বিয়ের উৎসবে পরিণত হয়েছে।” 

স্থানীয় বাসিন্দা ও বরের চাচাতো ভাই মহব্বত জান চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, “একসময় গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ ছিল ঘোড়া। বিশেষ করে রাজ পরিবার বা জমিদার পরিবারের সদস্যরা যেন ঘোড়া ছাড়া চলতোই না। এখন আর ঘোড়া হাঁকিয়ে রাজপুত্রের ছুটে চলার দৃশ্য চোখে পড়ে না। গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ধরে রাখতে সেই ঘোড়ার পিঠে চড়ে কনের বাড়িতে যাওয়ার আয়োজন করা হয়।”

বোয়ালমারী উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য আমীর চারু বাবলু জনকণ্ঠকে বলেন, “একসময় পালকি, ঘোড়ার গাড়ি ও গরুর গাড়িই ছিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। এখন সচরাচর এসব যানবাহন দেখা যায় না। অনেক দিন পর গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া সেই ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে কনের বাড়িতে যাওয়ার দৃশ্য দেখে খুবই ভালো লাগল।” 

মিরাজ খান

×