
ছবি: জনকণ্ঠ
ফরিদপুরের সালথায় উপজেলা যুবলীগ নেতা সোহেল রানা ফরহাদ মোল্লার নেতৃত্বে পাশের গ্রাম থেকে সহস্রাধিক লোক ভাড়া করে এনে সোনাপুর ইউনিয়নে বিএনপি-সমর্থকদের অন্তত ৩০টি বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও আব্দুল হাই নামে এক ব্যক্তির একতলা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
রবিবার (১১ মে) সকাল ১১টায় সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মান্নান মাতুব্বর বলেন, “আমি কোনো রাজনীতি করি না। তবে ২০১৪ সালে বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ আমার বাড়িতে আসেন। এরপর থেকেই সালথা উপজেলা যুবলীগের নেতা সোহেল রানা ফরহাদ মোল্লা আমাদের উপর অত্যাচার শুরু করেন। ৫ আগস্টের পর মনে করেছিলাম তার হাত থেকে রক্ষা পাব, কিন্তু তা আর হয়নি।
গতকাল শনিবার সকালে ফরহাদ মোল্লা বিএনপি নেতা ও সালথা সরকারি কলেজের বাংলা প্রভাষক শাখাওয়াত হোসেন জয়নাল এবং নান্নু মেম্বারের সঙ্গে মিলে বহিরাগত লোক নিয়ে আমার বাড়িসহ অন্তত ৩০টি বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে তাণ্ডব চালান, আগুন লাগান এবং লুটপাট করেন। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
এ সময় হামলাকারীদের বিচার দাবিতে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাদশা মোল্যা, ওবায়দুর খা, সুমন সরদার ও নাছিমা বেগমসহ আরও অনেকে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “ফরিদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরীর আস্থাভাজন যুবলীগ নেতা ফরহাদ মোল্লার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও তিনি খোলশ পাল্টিয়ে বিএনপি নেতা জয়নাল ও নান্নু মেম্বারের সহায়তায় আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছেন। আমরা ফরহাদ মোল্লা ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।”
এছাড়া তারা এলাকায় শান্তি ফেরাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং সালথা উপজেলা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আকিকার মাংস ভাগাভাগি নিয়ে সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া গ্রামে উত্তেজনা দেখা দেয়। এরই জেরে শনিবার সকালে ফরহাদ মোল্লা, ইউপি সদস্য নান্নু ও বিএনপি নেতা জয়নাল পাশের যুথনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া, সোনাপুর ও রাঙ্গারায়ের কান্দী গ্রাম থেকে সহস্রাধিক লোক ভাড়া করে এনে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ রাঙ্গারদিয়া গ্রামে অতর্কিত হামলা চালান। তারা একতলা একটি ভবনে আগুন লাগান এবং ৩০টি বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নারীরা শিশুদের নিয়ে ছুটোছুটি করতে থাকেন।
খবর পেয়ে সালথা থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
শহীদ