
নিজের আত্মবিশ্বাস অক্লান্ত পরিশ্রম আর কোন প্রতিকুল অবস্থাকেই হার মানাতে পারেনি প্রতিবন্ধী মেধাবী শিক্ষার্থী মানিক রহমানকে। চলতি বছর শুধু পা দিয়ে লিখেই এবার হাজী মুহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) এ ভর্তি পরীক্ষায় বি ইউনিটে মেধা তালিকায় ১৯২ তম স্থান অধিকার করেছে। রবিবার দুপুরে ফলাফল প্রকাশিত হলে মানিকের এ সাফল্যে মা-বাবা সহ এলাকাবাসী সকলেই আনন্দ উচ্ছাস প্রকাশ করে।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে মানিকের বাড়ি। বাবা মিজানুর রহমান ব্যবসায়ী আর মা মরিয়ম বেগম সহকারী অধ্যাপকের বড় ছেলে সে। শুধু এবারই নয় এসএসসি- এইচএসসিতে সহ সকল পরীক্ষায় বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় নিজের আত্মবিশ্বাস ও মনোবলকে কাজে লাগিয়ে ছোট বেলা থেকে প্রতিটি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করে আসছে। পড়াশুনার পাশাপাশি পা দিয়ে মোবাইল চালানো এবং কম্পিউটার টাইপিং এ যথেষ্ট পারদর্শী সে। ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতো কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এবার তার স্বপ্ন পুরন হবে।
মানিকের বাবা মো: মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম জানান, আমাদের দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম নবম শ্রেণিতে পড়ে। মানিক জন্ম থেকেই শারিরীক প্রতিবন্ধী। তার দুটি হাত নেই, একটি পা অন্যটার চেয়ে অনেকাংশে খাটো। কিন্তু প্রতিবন্ধী হলেও আমরা তাকে প্রতিবন্ধী মনে করি না। হাত না থাকায় ছোট থেকেই আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। পা দিয়ে লিখলেও তার লেখা অনেক সুন্দর এবং পড়াশোনায় সে খুবই মনোযোগী। সকলের দোয়ায় আজ তার কম্পিউটার ইন্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নের দ্বার উন্মোচিত হলো। সকলে দোয়া করবেন সে যেন একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে।
মানিক রহমান জানায় , আমার দুটি হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমত, বাবা মা ও শিক্ষকদের দোয়া এবং অনুপ্রেরণায় আমি পিইসি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। এ বছর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে মেধা তালিকায় ১৯২ তম স্থান অধিকার করেছি। সকলেই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি।
মুমু