
ছবি : জনকন্ঠ
ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে আছে ছোট্ট শিশু বায়োজিদ। সে জানে না কেন এত মানুষ জড়ো হয়েছে, কেন তার মা কাঁদছেন। সে জানেও না তার বাবা আর নেই। নিষ্পাপ শিশুটি আর কোনোদিন বাবার কোলে ঘুমাবে না। পাংশার কৃষক ও বিএনপির কর্মী রাশিদুল ইসলাম (৩৫) খুন হওয়ার পর বাবার বিচারের দাবিতে হাজারো মানুষের সাথে রাজপথে এসেছে ৬ মাসের বায়োজিদও।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের জোনা বাজারে সর্বস্তরের মানুষের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে মায়ের কোলে অংশ নেয় শিশু বায়োজিদ।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জহিরুল আলম মুরাদ বিশ্বাস, নিহত রাশিদুলের বাবা কিয়ামউদ্দিন মণ্ডল, মা আলেয়া বেগম, স্ত্রী জরিনা বেগম, জিয়া সাইবার ফোর্সের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন, জেলা জিয়া সাইবার ফোর্সের তথ্য ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল হাসান, কালুখালী উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি আনিছ মোল্লা, ইউপি যুবদলের আহ্বায়ক ওয়াজেদ আলী, মৌরাট যুবদলের আহ্বায়ক ফরিদ বিশ্বাসসহ আরও অনেকে।
বক্তারা রাশিদুলকে ‘নির্যাতিত বিএনপি পরিবারের সদস্য’ উল্লেখ করে বলেন, নির্মমভাবে নির্যাতনের পর তার পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তারা দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভকারীরা পাংশা-লাঙ্গলবাঁধ সড়কে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন।
উল্লেখ্য, নিহত রাশিদুল বরিশালে ধান কেটে প্রায় ২০-২৫ দিন পর গত ২ মে রাতে নিজ বাড়িতে ফেরেন। পরদিন সকালে ধান ভাগাভাগির কাজে বের হলে পূর্ব শত্রুতার জেরে পাট্টা ইউনিয়নের নিভা গ্রামের সড়কে উপজেলা বিএনপি নেতা শাহ মো. রফিকুল ইসলাম, আকিদুল ইসলাম, মারুফ হাসান সুমনসহ ১০-১৫ জন মিলে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রাশিদুলের মৃত্যুর খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মারুফ হাসান সুমনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আঁখি