
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পরকীয়ার জেরে স্ত্রীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে নিজেকেও দগ্ধ করেছেন এক ক্ষুব্ধ স্বামী। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চরপক্ষী গ্রামে ঘটে যাওয়া এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ হন রহিমা বেগম (৩০) ও তার স্বামী নুরুল আলম (৪৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দগ্ধ অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দু’জনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। রহিমার শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ ও আলমের শরীরের ৩০ শতাংশ অংশ দগ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অরুপ পাল।
নুরুল আলমের দাবি, বিয়ের পর সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। ৯ লাখ টাকা ধার করে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ জানতে পারি, রহিমা দক্ষিণ চরবংশী এলাকার এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছে। গত বছর আমি তাদের ঘরেও পাই। বিচার চাইতে অনেকের কাছে গেছি, থানায় লিখিত অভিযোগও দিয়েছি। কোনো প্রতিকার না পেয়ে আজ নিজেই সর্বনাশ করে ফেললাম।
তিনি আরও বলেন, ঘরে ঢুকেই দেখি সেই প্রেমিক কাদির ও তার লোকজন বসা। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পেট্রোল ঢেলে রহিমার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেই। পরে নিজেকেও পুড়িয়ে ফেলি।
অন্যদিকে রহিমার ভাগ্নি লুবনা আক্তার বলেন, আমার খালার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় আলম। আগুনে হাতাহাতির সময় আলমের শরীরেও আগুন লাগে। তবে পরকীয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলতে চাননি।
এ বিষয়ে রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং হাসপাতালে গিয়ে দগ্ধদের খোঁজ নেয়। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এটি ছিল দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। তাদের সম্পর্কের টানাপড়েন বহুদিনের। কিন্তু এভাবে বিষয়টি চরম পরিণতির দিকে যাবে, তা কেউ ভাবেননি।
এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বলছেন, পারিবারিক কলহ ও পরকীয়ার মতো সংবেদনশীল ইস্যুতে সহনশীলতা ও ন্যায়বিচার না পেলে এমন ট্র্যাজেডি ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে।
রাজু