
ছবি: জনকণ্ঠ
ভাঙ্গুড়ার বড়াল নদী এখন যেন এক বিস্তীর্ণ বোরো ফসলের মাঠ। বড়াল নদী, ঘুমানী নদী ও চারঘাটের মুখে বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীগুলো মরা খালে পরিণত হয়েছে। এই সুযোগে নদীর তলদেশে কৃষকরা বোরো ধানের ব্যাপক আবাদ করছেন। ফরিদপুর উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বড়াল নদীর তলদেশেও একই চিত্র।
স্থানীয় কৃষক আফজাল হোসেন জানান, “দীর্ঘদিন ধরেই নদীর নাব্যতা হারিয়ে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে নদী একেবারে শুকিয়ে যায়। তখন আমরা নদীর বুক চিরে বোরো ধান আবাদ করি এবং ভালো ফলনও পাই।”
এক সময়ের খরস্রোতা বড়াল নদী এখন অনেকটাই মরা খালে পরিণত হয়েছে। বর্ষাকালে এই নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকে, যা তীরবর্তী অনেক বাসিন্দার ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়েছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে এর বুক চিরে সবুজে সবুজে ভরে যায় বোরো ধানে। হাইব্রিড আগাম জাতের ধান রোপণ করায় কৃষকরা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে ১০-১৫ জন প্রান্তিক কৃষক ২০-২৫ একর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। এতে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
তারা জানান, মৌসুমের শুরুতেই বীজতলা তৈরি করে উচ্চ ফলনশীল ধান রোপণ করেন। নদীর তলদেশে জমিগুলোতে সেচের প্রয়োজন হয় না, পলি পড়ায় সার ও বিষও কম লাগে—ফলে খরচ কম এবং লাভ বেশি।
ফরিদপুর উপজেলার সোনাহারা, রামনগর, বেড়হাওলিয়া গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন, জয়নাল আবেদীন, আনসার আলী শেখ, জব্বার আলী প্রমুখ জানান, “নদীর বুকে চাষ করা জমিগুলো সমতল না হলেও ছোট ছোট প্লটে আবাদ করি। প্রতি বিঘা জমি থেকে ২০-২৫ মণ ধান উৎপাদন হচ্ছে।”
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, “প্রতি বছরই পানি কমে গেলে বড়াল নদীর চরে কৃষকরা বোরো ধান আবাদ করেন। এটি বাড়তি খাদ্য সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি।”
শহীদ