ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ফ্যাসিবাদই ছিল মুজিবের জাতীয়তাবাদ : বদরুদ্দীন উমর

প্রকাশিত: ১১:০৩, ১ মে ২০২৫; আপডেট: ১১:০৪, ১ মে ২০২৫

ফ্যাসিবাদই ছিল মুজিবের জাতীয়তাবাদ : বদরুদ্দীন উমর

ছবি : সংগৃহীত


বদরুদ্দিন ওমর বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা বামপন্থী রাজনীতিক, লেখক, গবেষক এবং তাত্ত্বিক, সাক্ষাৎকারের  তিনি বলেন, তিনি যা করেছেন, তা নিজের দায়িত্ব থেকেই করেছেন, এর জন্য পুরস্কার পাওয়ার প্রয়োজন নেই। শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি বেশ কঠোর। তিনি বলেন, মুজিব ছিলেন প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং “মেইন” ধরনের একজন ব্যক্তি। ওমরের ভাষ্যমতে, শেখ মুজিবকে তিনি ছোটবেলা থেকে চিনতেন। তার পিতা মুসলিম লীগের একজন শক্তিশালী নেতা ছিলেন এবং শেখ মুজিব তাদের কলকাতার ও গ্রাম্য বাড়িতে যাতায়াত করতেন।

 

 

তিনি বলেন, একসময় শেখ মুজিব তার পিতার অনুসারী ছিলেন, কিন্তু পরে নেতা হয়ে ওঠার পর সেই সম্পর্ক পাল্টে যায়। শেখ মুজিবের জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে বদরুদ্দিন ওমরের মন্তব্য, এটি ছিল ফ্যাসিবাদী এবং সংকীর্ণ বাঙালি জাতীয়তাবাদ। তিনি অভিযোগ করেন, মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের পরে বাঙালি ছাড়া অন্য জাতিসত্ত্বার কোনও স্বীকৃতি দেননি। তিনি দাবি করেন, শেখ মুজিব মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে বলেছিলেন, চাকমাদের বাঙালি হয়ে যেতে হবে, যা ছিল একপ্রকার জাতিগত আগ্রাসন। ভাষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উর্দুভাষীদের দমন করা হয়, তাদের শ্রমিক অঞ্চলে হত্যা করা হয়, এবং বাংলা ছাড়া অন্য ভাষার কোনও মর্যাদা শেখ মুজিব দেননি।

 

 

তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিবের শাসনামলে জনগণ নিপীড়ন, শোষণ আর দুর্নীতির শিকার হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডকে তিনি জনগণের সাথে তার বিচ্ছিন্নতার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখেন। ওমর বলেন, যেভাবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছে, একই পরিণতি হতো শেখ মুজিবেরও যদি তিনি আরও কিছুদিন ক্ষমতায় থাকতেন। শেখ হাসিনার শাসনকালকেও তিনি শোষণ, লুটপাট এবং নিপীড়নের সময় হিসেবে বর্ণনা করেন। তার মতে, বাপ ও মেয়ে উভয়েই বাংলাদেশের জন্য অভিশাপস্বরূপ ছিলেন।

 

 

তার ছেলেবেলা ছিল ব্যতিক্রমধর্মী। তিনি বর্ধমানের একটি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে প্রায় সব রাজনৈতিক দলের মানুষদের সাথে তার পরিচয় ছিল। তার পরিবার রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিল, এবং তাদের বাড়ি ছিল এক ধরনের রাজনৈতিক কেন্দ্র। স্কুলজীবনে তিনি নাটক, আবৃত্তিসহ নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে তিনি অমলের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ১০৪ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে। সেই অসুস্থতা থেকে তিনি টাইফয়েডে আক্রান্ত হন এবং দীর্ঘ ৫৩ দিন ধরে ডাবের পানি আর ছানার পানি খেয়ে বেঁচে থাকেন।

দেশভাগের সময় তার বয়স ছিল ১৬ বছর। রাজনীতির প্রতি আগ্রহ তখন থেকেই ছিল, যদিও তিনি কোনও ছাত্রসংগঠনে যোগ দেননি। ১৯৫০ সালে তাদের বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনার পর তার পিতা বাধ্য হয়ে পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসার সিদ্ধান্ত নেন। এ সিদ্ধান্তকে তিনি আজও ভুল মনে করেন, কারণ পশ্চিম বাংলায় তাদের পরিবারের অবস্থান, প্রতিষ্ঠা ও সম্মান অনেক বেশি ছিল। এখানে এসে তাদের পরিবার পরিচিতিহীন, কষ্টপূর্ণ জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়।

 

 

১৯৫৬ সালে তিনি এমএ পাস করেন এবং কর্মজীবন শুরু করেন চট্টগ্রামের একটি সরকারি কলেজে। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং সেখানকার রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে তিনি এক সময় রাজনীতি ও লেখালেখিতে জড়িয়ে পড়েন। তার লেখার কারণে তৎকালীন গভর্নর মনেম খান তাকে বরখাস্ত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন, কিন্তু উপাচার্য শামসুল হক তার চাকরি রক্ষা করেন। এরপরও ক্রমাগত চাপ ও হুমকির মুখে তিনি ১৯৬৮ সালে চাকরি ছেড়ে দেন এবং এরপর আর কোনও চাকরি করেননি।

 

 

সূত্র:https://youtu.be/JZxx3Y_EXXg?si=hVN0MldhgeYBAvZw

আঁখি

×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার