
রাজবাড়ী, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তঘেঁষা এলাকাকে সংযুক্ত করতে গড়াই নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের ৩ জুন। ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুর কাজ দ্রুত শেষ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের সূচনা হতো। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি সেতুর নির্মাণ কাজ, আর এতে করে ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাজবাড়ী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্প’ (সিআইবিআরআর)-এর আওতায় প্রায় ৬৩ কোটি ৯১ লাখ টাকায় এ সেতু নির্মাণের চুক্তি হয়। কাজটি বাস্তবায়ন করছে মীর হাবিবুল আলমের (জেভি) এমএম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং। ২০২৩ সালের ৩ জুন কাজের মেয়াদ শেষ হলেও দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়ানো হয়।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের নাদুরিয়া ঘাটে সেতু নির্মাণকাজ চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। সবগুলো খুঁটির কাজ শেষ হলেও এখনো বসানো হয়নি ৫টি স্প্যান। এর মধ্যে দুইটি গার্ডার সাইটে প্রস্তুত থাকলেও বাকি তিনটির কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। কাজের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিকও পর্যাপ্ত নয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুর কাজ শেষ করতে না পারাটা অত্যন্ত হতাশাজনক। কেবল ৭-১০ জন শ্রমিক দিয়ে এত বড় প্রকল্প শেষ করা সম্ভব নয় বলেও তারা দাবি করেন। পাশাপাশি সংযোগ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ এখনও শুরু হয়নি, যা প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির দায়িত্বে থাকা কে. এম. ইয়াহিয়া বলেন, ‘সেতুর কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সংযোগ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় বাকি কাজ থমকে আছে।’
পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম আবু দারদা বলেন, ‘সেতু নির্মাণের বিষয়ে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে, যেটি নিরসনের চেষ্টা চলছে।’
এলজিইডির রাজবাড়ী জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী ইউসুফ হোসেন বলেন, ‘সেতু নির্মাণে শুরুর দিকে ধীরগতি ছিল, সেটা ঠিক। বর্তমানে কাজের গতি কিছুটা বেড়েছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হলে দ্রুতই বাকি কাজও শেষ করা যাবে।’
স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে—এমন প্রত্যাশায় দিন গুনছে তিন জেলার মানুষ।
রিফাত