আবদুর রহমান বদি
দে হ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের যেসব মন্ত্রী-এমপি দুর্নীতি, দস্যুতা, মাদক কারবারসহ নানা কর্মকাণ্ডে বহুল বিতর্কিত হয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম বহুল আলোচিত কক্সবাজারের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি। কক্সবাজারের সাবেক এমপি বদিকে মানুষ বেশি চেনে ‘ইয়াবা ডন’ হিসেবে। আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র ক্ষমতা ব্যবহার করে ইয়াবার আন্তর্জাতিক চক্রের ডন বনে যাওয়া সাবেক এমপি বদি অঘোষিত মাদক সম্রাট।
ইয়াবা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অর্থসম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বদি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিজেকে রক্ষা করতে চলে যান আত্মগোপনে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জালে আটকা পড়েন তিনি। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বদি আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেননি। বদির অনুপস্থিতিতে তার ইয়াবা সিন্ডিকেট এখন আবার নতুনভাবে মাথা তুলে সক্রিয় হওয়ার কৌশল খুঁজছে। ইয়াবা সম্রাট বদির বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়াবা সম্রাট বদির একটি জগৎ আছে, এই জগৎ প্রকাশ্যে নয়, অন্ধকার জগত। দেশে ইয়াবা ব্যবসার সবচেয়ে প্রভাবশালী গডফাদার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সেই জগতের এই মুকুটহীন সম্রাট। তার ভয়ঙ্কর ছোবলে বাংলাদেশের দক্ষিণের শেষপ্রান্তের সাগর-পাহাড়-বনভূমিঘেরা টেকনাফ এখন বিষে জর্জরিত। সুন্দর এই জনপদটি হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মাফিয়াদের অবাধ বিচরণ ভূমি। তাকে ধরতে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে অভিযান চালায় র্যাব।
পরে টেকনাফের একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বদি কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি। টেকনাফের ইয়াবা সা¤্রাজ্য দীর্ঘদিন ধরে বদি ও তার পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন বদি।
দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি তিনি। তবে এ দুই নির্বাচনে তার স্ত্রী শাহীন আক্তার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন। মাদক চোরাকারবারে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় বদির নাম আছে। এ তালিকায় গডফাদার হিসেবে বদির চার ভাইসহ পরিবারের অন্তত ২৬ জনের নাম রয়েছে।
নির্বাচনী বিরোধের জের ধরে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আলমকে লক্ষ্য করে গুলি করার অভিযোগ ওঠে বদির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় জিডি করেছিলেন নুরুল আলম। মিয়ানমার থেকে দেশে ইয়াবা আনার অন্যতম রুট টেকনাফ। অভিযোগ রয়েছে, বদির পৃষ্ঠপোষকতায় ইয়াবা কারবার চলত। বদির ভাই ও আত্মীয়স্বজন নিয়ন্ত্রণ করেন ইয়াবা আনার রুট। ক্ষমতার প্রভাবে ইয়াবা গডফাদাররা সব সময় থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় নাম এলেও তারা প্রকাশ্যে ইয়াবার রাজ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ইয়াবা কারবারিরা এতটাই প্রভাবশালী, আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি তুলতেও কেউ সাহস করেন না।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে টেকনাফ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন বদি। ২০০৮ সালে কক্সবাজার-৪ আসনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। জনপ্রতিনিধি হওয়ার ২৩ দিনের মাথায় টেকনাফ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে মারধর করেন। তার হাতে হেনস্তার শিকার হন টেকনাফের বন বিভাগের কর্মকর্তা। ভোটার তালিকা তৈরি করাকে কেন্দ্র করে একজন স্কুল শিক্ষক তার হাতে নির্যাতনের শিকার হন।
এরপর জড়িয়ে পড়েন টেন্ডারবাজি, জমি দখল, চাঁদাবাজিতে। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য হন তিনি। এর পর থেকে চোরাচালান, ইয়াবা কারবার, মানব পাচারসহ রোহিঙ্গা আশ্রয়-প্রশ্রয় নিয়ে জড়ান নানা অপকর্মে। ইয়াবাকা-ে বদিকে নিয়ে বিতর্ক উঠলে পরের নির্বাচনে ওই আসনে তার স্ত্রী শাহীন আক্তারকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ।
এমপি থাকার সময়ে ১০ বছর নানাভাবে আলোচিত-সমালোচিত নাম আবদুর রহমান বদি। ভাই, স্ত্রী, মামা, ভাগিনাসহ স্বজনদের নিয়ে ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগেই বেশি সমালোচিত তিনি। এমনকি অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুদকের করা দুর্নীতির মামলায় সাজাও হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ আছে, টেকনাফের ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ করে বদির পরিবারই। বদির পরিবারের ইয়াবা সিন্ডিকেট সদস্যরা হলেন এমপি বদির আপন ভাই মোঃ আবদুল শুক্কুর, মজিবুর রহমান ওরফে মুজিব কমিশনার, শফিকুল ইসলাম, সৎভাই আবদুল আমিন, ফয়সাল রহমান, ভাগিনা আবদুর রহমান দারোগার ছেলে নিপু, শাহেদ কামাল, মামা হায়দার আলী ও মামাতো ভাই কামরুল ইসলাম রাসেল।
তারাই পুরো টেকনাফ স্থলবন্দর দখল করে রাজত্ব করেন। এ ছাড়া ইয়াবা পাচারে ব্যবহৃত গাড়ির তালিকায়ও রয়েছে বদি পরিবারের গাড়ির নাম। বদিকে গ্রেপ্তারের খবরে টেকনাফের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফেরে। মুহূর্তে এ খবর সীমান্তজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ইয়াবা আসার চালান বন্ধ হয়ে যায়।
গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি বদি ইয়াবা স¤্রাট। তার কারণে দেশজুড়ে মাদক ছড়িয়ে পড়ে।
বদি এবং তার স্ত্রী এমপি থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। বিশেষ করে মাদক চোরাচালান ও স্বর্ণ পাচারে জড়িত ছিলেন দীর্ঘদিন। বদি অবৈধ টাকায় দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়েছেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে ৩ বছরের কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার মাদক সাম্রাজ্যে সাবেক এমপি বদি ‘মেজভাই’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন অনেক আগেই। চোরাচালান, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, অনিয়ম, দখল, ক্ষমতার দাপটের নজিরবিহীন সব কা- তার অন্ধকার জগৎকে সমৃদ্ধি করেছে।
এমপি বদি এতটাই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন যে, তার কথামতো কাজ না করায় তিনি নিজেই মারধর করেছেন সরকারি কর্মচারী, স্কুলশিক্ষক, আইনজীবী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ অনেককেই। মাদক ও চোরাচালান করতে বদি নজিরবিহীনভাবে ব্যক্তিগত বন্দর ও ঘাট পর্যন্ত গড়ে তোলেন। বদির পরিবার এখনো নিয়ন্ত্রণ করছে দেশের ইয়াবা ব্যবসা।
গোয়েন্দা অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াত অথবা আওয়ামী লীগ; যে আমলেই হোক, যেভাবেই হোক সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন বদি। বিএনপির কাছেও মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের নৌকায় চড়েই পার হয়েছেন বৈতরণী। এরশাদ সরকারের সময় বদির বাবা এজাহার মিয়া ছিলেন টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান। বাবার কাছেই রাজনীতির হাতেখড়ি সমালোচিত এই বদির। এরশাদ সরকারের পর বদির বাবা যোগ দেন বিএনপিতে।
টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাবার হাত ধরেই টেকনাফ উপজেলা বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে শুরু করেন তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপি আমলে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে বিভিন্ন চোরাচালানি ব্যবসায় হাত পাকান বদি। তবে ১৯৯৬ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগ মুহূর্তেই বিএনপি থেকে মনোনয়ন চেয়ে বসেন তিনি। কিন্তু অপকর্মের খবর পাওয়ায় সে সময় বিএনপির হাইকমান্ড বদিকে মনোনয়ন দেয়নি বলেও শোনা যায়। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন বদি।
সূত্র জানায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ ও ১৯৯৬ সাল ছাড়া পরবর্তী কোনো নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে জিততে পারেনি আওয়ামী লীগ। কিন্তু ২০০৮ সালে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে জয় ছিনিয়ে আনেন বদি। এর পর থেকে টেকনাফে শুরু হয় বদির শাসন। হয়ে ওঠেন অন্ধকার জগতের মুকুটহীন স¤্রাট।
গোয়েন্দা অনুুসন্ধানে প্রকাশ পেয়েছে, আন্তর্জাতিক চোরাচালান সিন্ডিকেটের অন্যতম গডফাদার ছিলেন টেকনাফের এজাহার মিয়া ওরফে এজাহার কোম্পানি। নিরাপত্তা বাহিনীর তালিকাভুক্ত এই শীর্ষ চোরাচালানির ১২ স্ত্রীর ২৬ সন্তানের মধ্যে সবার বড় আবদুর রহমান বদি। জানা যায়, বাবার বিশাল চোরাই ব্যবসায় কিশোর বয়সেই হাতেখড়ি হয় তার।
বঙ্গোপসাগর দিয়ে অস্ত্র, মাদকসহ নানা চোরাইপণ্য বাংলাদেশে প্রবেশের টানেলখ্যাত টেকনাফের আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যবসার পুরো নিয়ন্ত্রণ এক সময় চলে আসে বদির হাতে। রাতারাতি ধনী হয়ে ওঠেন তিনি। পাশাপাশি রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন দলের সঙ্গেও গড়ে তোলেন সুসম্পর্ক। বদির কারণে টেকনাফ হয়ে ওঠে মাদকের রাজধানী। ইয়াবার জোয়ারে তাই ভাসে গোটা টেকনাফ।
এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান ব্যবসাই হয়ে ওঠে ইয়াবা। টেকনাফের রাজনীতি আর অর্থনীতিÑ সব ইয়াবাকে কেন্দ্র করেই চলে। জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি থেকে শুরু করে এমন কোনো সেক্টর নেই, যে সেক্টরের লোকজনকে ইয়াবার ব্যবসায় জড়াননি বদি। ইয়াবাকে বদি এতটাই লাভজনক ব্যবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন যে, লবণ চাষ, মাছ চাষ, কাঠ ব্যবসাসহ বিভিন্ন বৈধ ব্যবসা ছেড়ে শত শত ব্যবসায়ী ইয়াবায় অর্থ লগ্নি করেন। আর এসব কারণে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা টেকনাফ হয়ে ওঠে মাদকের স্বর্গরাজ্য।
কক্সবাজার ও টেকনাফের পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, ইয়াবা কারবারের পুরোটাই গডফাদার বদির পরিবারের হাতে। টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, এমপির সঙ্গে সব সময় চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের চলাফেরা। বদির ভাই, বন্ধু ও সহযোগীরা বেপরোয়া ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি বদির ক্ষমতার জোরেই চলছে, এ কথা সবাই জানে। এমপির এই ইয়াবা ব্যবসার কথা জানে সরকার ও দল।
এর পরও তারা কিছু করছে না। এখানকার সাধারণ মানুষ এমপি এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গদের কাছে অসহায়। মাঝেমধ্যে পুলিশ অভিযান চালায়। ক্রসফায়ার হয়। কিন্তু রাঘব বোয়াল বদি সব সময় থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। ক্ষমতার কাছে থাকায় ইয়াবা ব্যবসাই বদি ও তার লোকজন সব সময়ই থাকে প্রশাসনের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বারবার বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় নাম এলেও তারা প্রকাশ্যেই ইয়াবার রাজ্যে দাপিয়ে বেড়ান।
ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এতটাই প্রভাবশালী যে, জেলা আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে বিষয়টি তোলার কেউ সাহস করেন না। কেউ বিষয়টি তুললেও বদি রেগে ফেটে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক ইয়াবার চালানও ছাড়িয়ে নিয়ে যান বদি। ইয়াবা পাচারে কখনো কখনো বদির গাড়িও ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
সূত্রমতে, শুধু তা-ই নয়, বদি ও তার স্ত্রীর গাড়ি থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। সর্বশেষ গত বছর আগস্ট মাসে কুমিল্লায় বদির উপস্থিতিতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার গাড়ি থেকে বিপুল ইয়াবা উদ্ধার করে। কিন্তু বিতর্কিত সাবেক এ সংসদ সদস্য প্রভাব খাটিয়ে পুরো ইয়াবার চালান নিয়েই ঢাকায় আসেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা দেশের ৩১ শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকায় ভাই-বেয়াই, মামা-ভাগ্নে মিলিয়ে বদিসহ ১০ ইয়াবা ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র ক্ষমতা ব্যবহার করে ইয়াবার আন্তর্জাতিক চক্রের ডন বনে যাওয়া সাবেক এমপি বদি সরকার পতনের পর নিজেকে রক্ষা করতে চলে গিয়েছিলেন আত্মগোপনে। বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে থাকার পর চট্টগ্রামের একটি বাসা থেকে তাকে আটক করে র্যাব। এর পর আদালতের মাধ্যমে বদিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত সাড়ে ১৫ বছর সীমান্তের সাম্রাজ্য এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করা বদির আপাতত ঠিকানা কক্সবাজার কারাগার। বদি নিজেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জাল থেকে রক্ষা করতে না পারলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখেছেন নিজের নামে লাইসেন্স করা অস্ত্রটি।
গত ৩ সেপ্টেম্বর লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা দেওয়ার শেষদিন থাকলেও বদি তার নামে লাইসেন্স করা অস্ত্রটি জমা দেননি বা কারো মাধ্যমে জমা করাননি। গত ৪ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে পাঠানো জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদন অনুযায়ী বদির অস্ত্রটি এখনো জমা পড়েনি।