ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

মাল্টার সঙ্গে দোল খাচ্ছে চাষি বিপ্লবের স্বপ্ন

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ৩ আগস্ট ২০২৪

মাল্টার সঙ্গে দোল খাচ্ছে চাষি বিপ্লবের স্বপ্ন

যশোরের চৌগাছায় মাল্টা পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষি বিপ্লব

চৌগাছায় মাল্টা চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন চাষি বিপ্লব হোসেন। বিপ্লব হোসেন চৌগাছার ইছাপুর গ্রামের মৃত  তৈয়ব আলীর ছেলে। তিনি ড্রাগন, পেয়ারা, কমলা ও চায়না লেবু চাষের পাশাপাশি মাল্টার আবাদ করেছেন। তিনি ফলের চাষ করে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা আয় করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চৌগাছা উপজেলায় এবার ২৮ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ করা হয়েছে। এতে মাল্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৯৮০ টন। এবার বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে উপজেলায় মাল্টা চাষ অনেক বেড়েছে।

সঠিকভাবে পরিচর্যা করা হলে চারা রোপণের দুই বছরের মাথায় ফল আসতে শুরু করে। এ ফলের আবাদে সার কীটনাশক তুলনামূলক কম লাগে। পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। যে কারণে ফলের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। বিপ্লব হোসেন একজন সরকারি সুবিধাভোগী ফল চাষি। ইছাপুর গ্রামের পশ্চিম মাঠে তার মাল্টা বাগানে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমাণে মাল্টা এসেছে। গাছের মাল্টার সঙ্গে দোল খাচ্ছে চাষি বিপ্লব হোসেনের স্বপ্ন পূরণের আশা। মাল্টার গাছগুলো ফলের ভারে নুয়ে পড়ার উপক্রম।  

মাল্টার গাছ যেন পড়ে না যায় সে জন্য বাঁশের খুঁটি দেওয়া হয়েছে। চাষি বিপ্লব হোসেনের পাশাপাশি পরিবারের লোকজনও পরিচর্যা কাজে সহায়তা করেন। মাল্টা বাগানজুড়ে গাছে গাছে প্রচুর পরিমাণে মাল্টা দোল খাচ্ছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পরিমাণে মাল্টা ধরেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তিনি।
বিপ্লব জানান, ২০২০ সালের শুরুর দিকে প্রায় দেড় বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বারি-১ জাতের পয়সা মাল্টা চাষ শুরু করেন তিনি। দেড় বিঘা জমিতে মাল্টা গাছের চারা রোপণ করেন ১৩০টি। মাল্টা চাষে লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশা বুক বেঁধে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন তিনি।
বিপ্লব তার ফল বাগানের চারধারে বেড়া হিসেবে দেশী জাতীয় কাগুজি লেবুর গাছ লাগিয়েছেন। বেড়ার পাশ দিয়ে লাগিয়েছেন মেটে আলু, পোল্লা, ঝিঙা, ঢেঁড়শ ও শীম। তিনি সাথী ফসল হিসেবে ফলের গাছের ফাঁকে ফাঁকে হলুদ, পেঁপে, পুঁইশাক, লালশাক, বেগুন ইত্যাদি আবাদ করেছেন। ফল চাষের পাশাপাশি এ সকল সাথী ফসল থেকেও বেশ টাকা আয় করে থাকেন বলে তিনি জানান।
মাল্টা চাষি বিপ্লব বলেন, স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি মাল্টা ৮০ থেকে ৯০ টাকা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। আমার বাগান থেকে ইতোমধ্যে ১০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি হয়েছে। এবার প্রায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার কেজি মাল্টা পাওয়ার আশা করছি। উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত মাল্টার বাগান পরিদর্শন ও পরামর্শ প্রদান করা হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার মুসাব্বির হুসাইন বলেন, ফলের চাষে লাভবান হওয়ায় মাল্টাসহ বিভিন্ন প্রকার ফল চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশিক্ষণসহ ফল চাষে এখন কৃষকদের সরকারিভাবে সহায়তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

×