ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১

লোডশেডিং

মেহেরপুরে চাষাবাদ ব্যাহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেহেরপুর

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ২৭ জুন ২০২৪

মেহেরপুরে চাষাবাদ ব্যাহত

বিদ্যুতের লোডশেডিং থাকায় কৃষক জমিতে সেচ দিতে পারছেন না

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়ার কারণে ব্যাহত হচ্ছে সেচ কাজ। মৌসুমের শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার ফলে ঘন ঘন সেচ দিতে হচ্ছে জমিতে। লোডশেডিঙের ফলে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। আর কিছুক্ষণ পর পর বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান সেচপাম্প মালিকরা।  মেহেরপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৩২ মেগা ওয়াট। 
তীব্র গরমে একদিকে যখন জনজীবন বিপর্যস্ত অপরদিকে লোডশেডিঙের ফলে ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ। ধান কাটার পর নতুন করে সেচ দিয়ে পরবর্তী ফসলে যাচ্ছে কৃষক। অনেকেই করছেন সবজিসহ অন্য আবাদ। মাঠে রয়েছে পাটের আবাদ। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। পুড়ছে ফসলের মাঠ। অনাবৃষ্টির কারণে ঘন ঘন সেচ দিতে হচ্ছে। আর সেখানেই বাদ সাধছে লোডশেডিং। সেচপাম্প থেকে সঠিকভাবে পানি নিতে পারছেন না তারা।

অপরদিকে ডিজেল চালিত পাম্প থেকে সেচ সুবিধা নিতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। ফলে অনেকটাই বিপাকে পড়েছে কৃষক। সেচপাম্প মালিকরা বলছেন, দিনে ৮ থেকে ১০ বার পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। বারবার বিদ্যুৎ যাওয়ার ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারাও। প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময়ে লোডশেডিঙের দাবি তাদের।  মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলার চিত্র একই রকম।
সদর উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের আব্দুর রহমান জানান, মাঠে আমাদের সেচপাম্প আছে। বিদ্যুতের খুবই সমস্যা। সন্ধ্যা থেকে রাতে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং থাকে আবার দিনেরবেলায়ও ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাই না। দিনের মধ্যে ৫ থেকে ৭ বার  লোডশেডিং দেয় আবার কখনো কখনো দিন-রাত মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ বারও লোডশেডিং দেয়। এতে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি। জমিতে ঠিকমতো পানি দিতে পারছি না। লোডশেডিং কমালে আমাদের জন্য ভালো হয়।
একই গ্রামের কৃষক রহমান মিয়া জানান, আমরা পাট বোনার পর থেকে কোনো বৃষ্টি পাইনি। ফলে ডিজেল চালিত মেশিন দিয়ে সেচ দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে বিদ্যুতের মোটর দিয়ে সেচ দিতে কম খরচ হলেও আমরা ঠিকমতো পানি পাই না। অর্ধেক জমিতে পানি দিতে দিতে কারেন্ট চলে গেলে আবার নতুন করে জমিতে পানি দিতে হচ্ছে। এতে  আমাদের সময় যেমন নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে টাকাও বেশি লাগছে।

সদর উপজেলার চকশ্যামনগর গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, একদিকে যেমন লোডশেডিং হচ্ছে অন্যদিকে প্রচুর গরমের কারণে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে। আবাদ নিয়ে তো আমরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। আগে যে ফসলে ১০/১২ হাজার টাকা খরচ হতো এখন সেই ফসলে ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এত খরচ হলে আমরা চাষিরা কিভাবে বাঁচব।
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কারিগরি ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী শ্যামল কুমার মল্লিক বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ রয়েছে তাদের। তবে ভোল্টেজ কম হওয়ার কারণে মাঝে মাঝে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এতে করে সাময়িক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

×