ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড় রেমাল

খোলা আকাশের নিচে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ২৯ মে ২০২৪; আপডেট: ২০:৪৯, ২৯ মে ২০২৪

খোলা আকাশের নিচে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে

পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে। 

কেউ খোলা আকাশের নিচে ধ্বংসযজ্ঞ ঘরের শেষ চিহ্নের উপর বসে আছে। আবার কেউ শেষ সম্বল ঘরের চালা খুঁটি, হাঁড়ি পাতিল, মালামাল যা আছে তা খুঁজে মেরামতের চেষ্টা করছে। কেউ বা ভেঙে যাওয়া গাছ কেটে সরিয়ে ফেলেছেন। এ চিত্র ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা, বড় মানিকা, গঙ্গাপুর এলাকার। বুধবার (২৯ মে) সরেজমিনে ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।  

ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবারের ভিটেমাটি চুলো পর্যন্ত ভেসে গেছে। তাই রান্না করে খাওয়া অবস্থাও নাই। কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের বাড়িতে। উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল ভয়াবহ তাণ্ডবে জেলার বিভিন্ন জনপদে রেমালের ধ্বংসযজ্ঞের দগ দগে চিহ্ন পরে আছে। কয়েক হাজার বিধ্বস্ত ঘরবাড়ির পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকেই অনাহারে খোলা আকাশের নিচে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। 

ক্ষতিগ্রস্ত লুতফা বেগম, লতিফা বেগম, বশির সহ দুর্গতরা জানান, জোয়ারের পানিতে তলিয়ে তাদের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে দিন পার করছেন। তাদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। এমন চিত্র ভোলার বিভিন্ন উপজেলার দর্গিত এলাকায়। 

জানা যায়, ভোলায় সরকারি হিসেবে জেলায় দুর্গত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ২৩ হাজার ৩০৩ জন। সম্পূর্ণ রুপে ২ হাজার ৪৪৫টি ঘর ও আংশিক ৫ হাজার ১৫৮টিসহ মোট সাত হাজার ৬২৩টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু ঘর বাড়িই নয়, জমির ফসল, পুকুরের মাছ, রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫ হাজার ৮৬০ টি পুকুর, ৯৫০টি মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে।  

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভোলায় ২৩ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার ৭৯১ হেক্টর সবজি, চার হাজার ৩০০ হেক্টর আউসের বীজতলা, পাঁচ হাজার হেক্টর আবাদকৃত আউস, এক হাজার ৩৩৫ হেক্টর বোরো ধান, ৫৭০ হেক্টর পান, ৪৮৯ হেক্টর আখ, ৪৫০ হেক্টর কলা, ৩০০ হেক্টর পেপের ক্ষতি হয়েছে। ভোলা জেলায় জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৫ কিলোমিটার গ্রামীণ কাঁচা সড়ক ।এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোর সহায়তা নগদ অর্থ সহ ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ করা হয়েছে।

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা জানান, তার এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পুরো বিধ্বস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য তারা ইতোমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

এম হাসান

×