ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বাকেরগঞ্জে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় সাত পুলিশসহ আহত ২০

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৫:৩৮, ৯ মে ২০২৪; আপডেট: ১৮:৩৭, ৯ মে ২০২৪

বাকেরগঞ্জে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় সাত পুলিশসহ আহত ২০

হাসপাতালে আহতরা। 

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে ৭ পুলিশ সদস্য ও প্রার্থীর সমর্থক নারী-পুরুষসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।

গতবাল বুধবার (৮ মে) অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা উপজেলা পরিষদ হলরুমে সন্ধ্যার পরে শুরু হলে সেখানে প্রার্থী ও তার সমর্থকরা জড়ো হয়। 

ফলাফল প্রকাশের শেষ দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলামের তালা মার্কা ব্যাপক ভোটে ব্যবধানে এগিয়ে থাকলে হঠাৎ করে সার্ভার সমস্যা দেখায় উপজেলা প্রশাসন। এ সময় শতভাগ বিজয় নিশ্চিত হয়ে তালা মার্কার সমর্থকরা বিজয় মিছিল দিতে থাকে। তখন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম সার্ভার সমস্যার কথা বলে ফলাফল প্রকাশ বন্ধ রাখেন। তখন হলরুম ছেড়ে উপজেলার কর্মকর্তারা তাদের অফিসে চলে গিয়ে দুই ঘণ্টা পরে রাত ১২টায় হল রুমে ফিরে এসে সাইফুল ডাকুয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান এমপি আব্দুল হাফিজ মল্লিকের আপন ছোট ভাই উড়োজাহাজ মার্কার সালাম মল্লিকের হাতে বিজয়ী ফলাফল তুলে দেয়। 

এ সময় সাইফুল ডাকুয়ার সমর্থকরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার রফিকুলের উপর ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ক্ষিপ্ত হয়ে ধস্তাধস্তি শুরু করলে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ চালায়। এতে ১০ জন সমর্থক আহত হন। 

এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আফজাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ সদস্য ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত সাত জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ এস আই আরিফুর রহমান, এস আই নাসির উদ্দিনসহ পাঁচ কনস্টেবল আহত হয়েছে। তারা এখন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। এই ঘটনায় বাকেরগঞ্জ থানায় দুটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। বাদল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে তিনজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।’

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডাকুয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম ভোট কারচুপির মাধ্যমে স্থানীয় এমপির আপন ছোট ভাই সালাম মল্লিকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। এ সময় আমার সমর্থকরা উত্তেজিত হলে পুলিশ নির্বিচারে নারী-পুরুষদের উপর লাঠিচার্জ চালায়। এ সময় পুলিশের ওপরও হামলার ঘটনা দেখিয়ে আমার একজন সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনে কোন কারচুপি করা হয়নি। আমার উপর মিথ্যা অভিযোগ এনে হামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন,‘নির্বাচনে কারচুপি কেউ করেনি। ফলাফল প্রকাশের সময় লাগতেই পারে। কিন্তু সাইফুল ইসলাম ডাকুয়ার সামর্থকরা উপজেলা চত্বরে বসে কর্মকর্তার গায়ে হাত দিয়েছে এটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। হামলার ঘটনায় আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

এম হাসান

×