ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

কাঠের পুলের তক্তা খুলে এতিমখানার জ্বালানি

নিজস্ব সংবাদদাতা, মোরেলগঞ্জ, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ৮ মে ২০২৪

কাঠের পুলের তক্তা খুলে এতিমখানার জ্বালানি

মোরেলগঞ্জে একটি কাঠের পুলের তক্তা খুলে জ্বালানি হিসেবে এতিমখানায় ব্যবহার করা হচ্ছে

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে একটি কাঠের পুলের সম্পূর্ণ তক্তা খুলে নিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠিত এতিমখানার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করলেন বলইবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী খান। গত দু’মাস ধরে পুলটি পাটাতনবিহীন থাকায় চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে তিন গ্রামের দেড় হাজার পরিবারের, বিকল্প ব্যবস্থায় অনেক পথ ঘুরে চলাচল করছে তারা। বিপাকে পড়েছে স্কুল শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যকেও অবহিত করেছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি পুলটি সংস্কার করে দ্রুত চলাচলের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী।  
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বলইবুনিয়া ইউনিয়নের দোনা-কালিকাবাড়ী সংযোগ খালের ওপরে নির্মিত কাঠের পুলটি দিয়ে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছে দোনা, কালিকাবাড়ী ও শ্রেনিখালী তিন গ্রামের দেড় হাজার পরিবারের ২/৩ হাজার মানুষ। গত ৬ মাস পূর্বে এ কাঠের পুলটির মাঝখান থেকে পাটাতন (তক্তা) ভেঙে পড়লে ভ্যান, মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। তবে এক পাশ দিয়ে মানুষ চলাচল করত প্রতিনিয়ত।

এ পুলটি পার হয়ে প্রতিদিন ৩/৪ শ’ শিক্ষার্থীরা যাচ্ছেন, কালিকাবাড়ী বলইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কালিকাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডা. খলিলুর রহমান কলেজ, সাবেরা ফেরদৌসি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসাসহ ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এ ছাড়াও দোনা, কালিকাবাড়ী ও শ্রেনিখালীর গুচ্ছ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ পুলটি। 
সংশ্লিষ্ট ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বাবুল বলেন, দুই মাস পূর্বে এ পুলের সম্পূর্ণ তক্তা খুলে নিয়ে চেয়ারমান সাহেব দিয়েছেন তার এতিমখানায়। এতিমখানার জ্বালানি সংকটে এ তক্তা ব্যবহার করা হবে বলে চেয়ারম্যান তাকে জানিয়েছেন। পুলটি পরবর্তীতে সংস্কার করা হবে। 
স্থানীয় দোনা গ্রামের বাসিন্দা বলইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি মো. শাহিদুল শেখ, পথচারী হান্নান শেখ, মো. শহিদুল ইসলাম, শাহাজাহান আলী শিকদার, কবির কাজীসহ একাধিকরা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আগে কোনোমতে ভাঙা পুল দিয়ে পারাপার হতেন গ্রামবাসী, এখন চেয়ারম্যান তক্তা খুলে নিয়ে যাওয়ার পরে সম্পূর্ণ পারাপার বন্ধ হয়ে গেছে। 
এ ব্যাপারে বলইবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান আলী খান বলেন, ভাঙা পুলটির তক্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে লোকজন পারাপারে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার আশঙ্কায় তক্তাগুলো খুলে নিয়ে এতিমখানায় রাখা হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে নিজের অর্থায়নে পুলটি সংস্কারের জন্য গাছ কেটে তক্তা করা হয়েছে এবং পুল মেরামতের জন্য মিস্ত্রিও ঠিক করা হয়েছে। মিস্ত্রি না আসায় কাজটি একটু বিলম্ব হচ্ছে। 
এ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম তারেক সুলতান বলেন, জন চলাচলের ব্যবহারে সরকারি বরাদ্দে নির্মিত পুল ভেঙে গেলে প্রয়োজনে সংস্কারের জন্য আবেদন করা যেতে পারে। তবে সরকারি সম্পদ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই।

×