ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৫ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ফেসবুকের পোস্টে ভাগ্য বদল, গাড়ি-বাড়ির মালিক হলেন বৃদ্ধ রিকশাচালক

প্রকাশিত: ১৭:৩৯, ৫ মে ২০২৪

ফেসবুকের পোস্টে ভাগ্য বদল, গাড়ি-বাড়ির মালিক হলেন বৃদ্ধ রিকশাচালক

গাড়ি-বাড়ির মালিক হলেন বৃদ্ধ রিকশাচালক

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের সহনাটি ইউনিয়নে সোনাকান্দি গ্রামের ৭৭ বছরের বৃদ্ধ হাবিবুর রহমান। একাধিকবার স্ট্রোক করলেও জীবিকার তাগিদে রিকশার প্যাডেল চালিয়ে অবিরাম ছুটেন রাজধানীর রাস্তায়। সারাদিন যে টাকা আয় করেন, তার সিংহভাগই যায় রিকশার মালিকের ভাড়া পরিশোধ করে। বাকিটার কিছু অংশ নিজের জন্য রেখে অন্য অংশ পাঠাতেন গ্রামে থাকা বৃদ্ধা স্ত্রীর কাছে।

যে সময়টা তার বিছানায় শুয়ে-বসে বিশ্রাম করার কথা, অভাবের তাড়নায় রিকশার প্যাডেল চালিয়ে এভাবেই চলছিল তার দিনকাল। জীবনের বাকিটা সময় শহর ছেড়ে গ্রামে থাকা স্ত্রী সঙ্গে কাটানোর ইচ্ছে ছিল হাবিবুর রহমানের। তার সেই দুরবস্থার কথা সাংবাদিকের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে গণভবনে পৌঁছেছে। তার পাশে দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন।

ফেসবুকে সাংবাদিকের ওই পোস্টটি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেনের দৃষ্টিগোচর হলে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পান হাবিবুর। পাশাপাশি তার কর্মসংস্থানের জন্য জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী তাকে একটি ইজিবাইক উপহার দিয়েছেন। এতে করে গ্রামে ফেরার ইচ্ছা ও গ্রামেই কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে এই অসহায় বৃদ্ধের। বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ জেলা প্রশাসক কর্তৃক দেওয়া উপহারের ইজিবাইকের চাবি হাবিবুরের হাতে তুলে দেন। পাশাপাশি সোনাকান্দি গ্রামে এই বৃদ্ধের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে বলে জানান প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ জানান, আমি সোনাকান্দি গ্রামে গিয়ে হাবিবুরের বাড়ি পরিদর্শন করি। তার মাত্র আধা শতাংশ জমি রয়েছে। যাতে ঘর নির্মাণ সম্ভব না হওয়ায় বিপত্তি বাঁধে। তবে সহনাটি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. দুলাল আহমেদ হাবিবুরের জমির পাশে থাকা দুই শতাংশ জমি দানের ঘোষণা দেওয়ায় কাজ সহজ হয়েছে। ইতোমধ্যে জমির দলিল সম্পাদন হয়ে গেছে। দ্রুতই ঘরের নির্মাণকাজ শুরু হবে। এ ছাড়াও হাবিবুর ও তার স্ত্রীকে বয়স্ক ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

হাবিবুর রহমান বলেন, সারাজীবন কষ্ট করেছি। আধা শতাংশ ভিটে ছাড়া নিজের আর কিছুই ছিল না। এক সাংবাদিক ভাইয়ের লেখালেখির কল্যাণে এসব পাচ্ছি। এখন স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আমার দিন রাজার হালে কাটবে। আমি অনেক আনন্দিত ও খুশি। সেই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাসহ যারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
 

 

এবি

×