ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৪ আষাঢ় ১৪৩১

বিলুপ্ত প্রায় তাঁত শিল্প দখলে পাওয়ারলুম

মোস্তফা কামাল সরকার, নরসিংদী 

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ২৪ মে ২০২৪

বিলুপ্ত প্রায় তাঁত শিল্প দখলে পাওয়ারলুম

নিপুণ ছন্দে এক কারিগর বুনছেন কাপড়। ছবি: জনকণ্ঠ

বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে একটি বিলুপ্ত শিল্প তাঁত শিল্প। অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে বাংলাদেশে তাঁতের ব্যবহার অনেক কমে গেছে। এক সময় নরসিংদীতে তাঁত শিল্পের কারখানায় পা ও হাতের নিপুণ ছন্দে সুতার একের পর এক বুননে কারিগররা তৈরি করতেন শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা। 

আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় সেই তাঁতশিল্পের কারিগরদের দিন কাটছে এখন অভাব-অনটনে। একসময় তাঁতশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ এলাকা হিসেবে নরসিংদীর খ্যাতি ছিল দেশজুড়ে, যা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশেও। সেই হাতেটানা তাঁত এখন বিলুপ্তির পথে। হস্তচালিত তাঁতের স্থান দখল করেছে বিদ্যুৎ চালিত তাঁত বা পাওয়ারলুম।

নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ, খলাপাড়া, বালুয়াকান্দী, আগানগর, হাসনাবাদ, আমিরগঞ্জ, চরসুবুদ্দি, হাইরমারা, নিলক্ষা, নলবাটা, কাট্টাখালি, মনিপুরা, নরসিংদী সদরের সাটিরপাড়া, রাঙামাটি, হাজিপুর, ঘোড়াদিয়া, চরাঞ্চলের করিমপুর, নজরপুর, চম্পকনগর, বাবুরহাট (শেখেরচর), মাধবদী, কৌলানপুর, ভাটপাড়া, ভগীরথপুর, শিবপুর উপজেলার চিনিশপুর, ধানুয়া, পুটিয়া, বেলাব উপজেলার চরবেলাব, পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল, ডাঙ্গা পাইকশা এলাকাগুলো ছিল হস্তচালিত তাঁতের জন্য বিখ্যাত। সব মিলিয়ে জেলায় লক্ষাধিক তাঁতকল ছিল। 

এখানকার তৈরি তাঁতের পোশাক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও রপ্তানি করা হতো। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে হস্তচালিত তাঁতের স্থান দখল করেছে পাওয়ারলুম বা বিদ্যুৎ চালিত তাঁত। স্বল্প সময় আর অল্প শ্রমে অধিক কাপড় উৎপাদন হওয়ায় এ অঞ্চলের তাঁতিরা ঝুঁকেছেন পাওয়ার লুমের দিকে।

রায়পুরা উপজেলার বালুয়াকান্দী গ্রামের হস্তচালিত তাঁতের কারিগর রহিম মিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকে এই কাজের সঙ্গে জড়িত হয়েছি। জীবনে অন্য কোনো কাজ শিখিনি। আমরা সারা দিন কাজ করে যে পরিমাণ কাপড় তৈরি করি, পাওয়ারলুমে কয়েক ঘণ্টায় সেই পরিমাণ কাপড় তৈরি হয়। তাই এখন আর তাঁত বুনিনা। এখন বাজারে পিঠা বিক্রি করি। 

 এসআর

×