ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৪ আষাঢ় ১৪৩১

বাগেরহাটে ‘রেমাল’ মোকাবেলায় ৪৪৬ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ২২:০৭, ২৪ মে ২০২৪

বাগেরহাটে ‘রেমাল’ মোকাবেলায় ৪৪৬ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

বিপদ সংকেত।

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবেলায় বাগেরহাটে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জরুরি সভা অনুষ্টিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা: খালিদ হোসেন এর সভাপতিত্বে জুম অনলাইনে অনুষ্ঠিত এ সভায় জেলার সকল বিভাগ ও দপ্তরের কর্মকর্তা এবং সকল উজেলা নির্বাহী অফিসারসহ জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসহ জনপ্রতিনিধি ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। 

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবেলায় সকল ধরণের প্রয়োজনীয় প্রস্তুত্তির বিষয়ে মতামত গ্রহন ও নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সাথে জেলার ৪৪৬ টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করার কথা জানানো হয়।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি উপলক্ষে ডিসি মোহা: খালিদ হোসেন বলেন, আমদের ৪৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রস্তুত রয়েছে। নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই ঝূঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয়ন কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় শুকনা খাবার ও পানিসহ চাল ও নগদ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

প্রয়োজন দেখা দিলেই সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউএনওদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।’ জেলা প্রশাসকের ভাষায়,‘ দুর্যোগপূর্ব, দুর্যোগ কালিন এবং দুর্যোগ পরবর্তি সকল ধরণের সমন্বিত প্রস্তুতি আমরা গ্রহন করেছি। মানুষ যত বেশী সচেতন হবে, ক্ষয় ক্ষতি তত কম হবে।”

সিভিল সার্জন ডা: জালাল উদ্দিন আহম্মেদ জানান, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য ১০ টি ‘কুইক রেন্সপস মেডিক্যাল টীম’ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এজন্য সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যন কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা সদরসহ প্রতি উপজেলায় কুইক রেসপন্সটীম গঠন করা হয়েছে।

সুন্দবনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও কাজী নুরুল করিম জানান।

এদিকে কোস্টগার্ডে ও নৌবাহিনী উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বঙ্গোপসাগর ও বিভিন্ন নদ-নদীতে থাকা নৌযানগুলোকে গভীর সমূদ্রে না যাবার জন্য বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার সকালেই নিম্নচাপ সৃষ্টির কথা জানানো হয়েছে। এ জন্য দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেতও দেখতে বলা হয়েছে। মাছ ধরার যানগুলোকে গভীর সমুদ্র না যেতে বলা হয়েছে। 

এই নিম্নচাপ যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তবে এর নাম হবে ‘রেমাল’। ‘রেমাল’ হলে বাংলাদেশের সুন্দরবনসংলগ্ন খুলনা ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার উপকূলের দিকেই আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদেরা। এর বিস্তৃতি অপেক্ষাকৃত বেশি হবে বলে তারা মনে করছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপপরিচালক মো. শামীম আহসান বলেন, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়নি। এটি সৃষ্টি হলে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে আসতে পারে। এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার হতে পারে। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, রেমাল আঘাত হানলে, তা প্রবল থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হতে পারে।’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্টের (আইডব্লিউএফএম) অধ্যাপক এ কে সাইফুল ইসলাম মনে করেন বাংলাদেশের উপকূল রেমালের সম্ভাব্য আঘাত হানতে পারে। ‘রেমাল’ হলে উপকূলের অনেক বড় এলাকাজুড়ে হতে পরে। এতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ারও শঙ্কা রয়েছে। তবে দেশের সর্বত্রই এর প্রভাব দেখা যেতে পারে।

এসআর

×