
চাঁদপুর শহরের লেকের পাড়ে সংস্কারকৃত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক। পাশেই মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অঙ্গীকার
‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ খ্যাত জেলা সদরের পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে এবং বেশকিছু প্রকল্প চলমান। ‘ক’ শ্রেণির এই পৌরসভাকে নান্দনিক করে গড়ে তুলতে বর্তমান পৌর পরিষদ সার্বিক উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে মেয়র জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে বর্তমান পরিষদ গত তিন বছরে প্রায় ৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছে। আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত পৌরসভার শত কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র। নির্বাচনী মেয়াদের মধ্যেই সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে শহরকে নান্দনিক করে গড়ে তোলা হবে। সড়ক, ড্রেন, ওয়াকওয়ে, হরিজনদের বাসস্থান, পানি সংকট দূরীকরণসহ ইতোমধ্যে পরিকল্পনার বেশকিছু কাজ দৃশ্যমান।
পৌরসভার প্রকৌশল শাখাসহ উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌরসভার বর্তমান মেয়র ২০২০ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছয় মাসের সাড়ে সাত কোটি টাকা বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছেন। বর্তমানে বেতন হালনাগাদ। বিদ্যুতের পাঁচ কোটি টাকা বকেয়া বিল পরিশোধ করে ব্যয় সংকোচন করেছেন। সবচাইতে বেশি বেহাল ছিল সড়ক ও ড্রেনেজ সমস্যা। নিজস্ব অর্থায়নে ইতোমধ্যে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক, ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরও উন্নয়ন কাজ চলমান।
শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের বাসিন্দা কবির হোসেন জানান, মেয়র খুবই সাহসিকতার সঙ্গে শহরের অধিকাংশ সরু সড়ক প্রশস্ত করছেন। যানজট নিরসনে এই উদ্যোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিগত সময়ে কোন মেয়রই সড়ক প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নিতে পারেননি।
শহরের ট্রাক রোড এলাকার বাসিন্দা আলম জানান, রহমতপুর আবাসিক এলাকা, পালপাড়া, নাজির পাড়া ও ট্রাক রোডে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো। ড্রেনেজ নির্মাণ ও সড়ক প্রশস্তকরণসহ জনদুর্ভোগ কমাতে বর্তমান মেয়রের পরিকল্পিত কাজগুলো শতভাগ বাস্তবায়ন হলে সত্যিকারে নান্দনিক শহর হবে চাঁদপুর পৌরসভা। ইতোমধ্যে বেশকিছু কাজ দৃশ্যমান। চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এ এইচ এম শামসুদ্দোহা জানান, পৌরসভার যেসব এলাকায় উন্নয়ন হয়নি এবং পিছিয়ে পড়া জনবসতি এলাকাগুলো বর্তমান মেয়র ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত খুবই গুরুত্ব দিয়ে কাজ সম্পন্ন করেছেন।
মেয়র মো. জিল্লুর রহমান বলেন, দেশের চরম সংকটময় অবস্থা কোভিডের মধ্যে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। এরপর বিশ^ময় সংকট। পৌরসভার অনেক বছর আগ থেকেই সমস্যা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া, গ্র্যাচুইটির টাকা বকেয়া, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, ঠিকাদারদের বিল বকেয়া। পৌরসভার অভ্যন্তরীণ এসব সমস্যা সমাধান করে একটি অবস্থানে আনতে প্রায় তিন বছর সময় পার হয়েছে। ইতোমধ্যে পৌরসভার অপচয় রোধ করে আয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমাদের রাজস্ব আয় পূর্বে ছিল ২৫ কোটি টাকা। এখন সেটি বৃদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ কোটি টাকা।
রাজস্ব আয় বৃদ্ধি অবশ্যই পৌরবাসী ভালোভাবে দেখবে। আমরাও এটাকে সাফল্য মনে করছি। মেয়র বলেন, আমরা এখন যে কাজটি করছি সেটি হচ্ছে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন। আমাদের যে সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা তৈরি করা অর্থাৎ নান্দনিক শহর গড়ে তোলা, সেই কাজগুলোই করা হচ্ছে। এই পৌরসভার ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে এগিয়ে যাব। ইতোমধ্যে প্রায় ৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে আমাদের ১০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হবে।