ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঝিনাইদহে ব্রিজ ভেঙে দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: ২২:২২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ঝিনাইদহে ব্রিজ ভেঙে দুর্ভোগ

শৈলকুপায় জিকে সেচ প্রকল্পের ব্রিজ ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে ৩০ গ্রামের মানুষ

জেলার শৈলকুপায় জিকে সেচ প্রকল্পের ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ। দীর্ঘ ৫ মাস ব্রিজ ভেঙে থাকলেও সংস্কার করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট বার বার আবেদন-নিবেদন জানিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলছেন মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, জেলার শৈলকুপা উপজেলার চরপাড়া গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ব্রিজটি দীর্ঘদিন ভেঙে আছে। চরপাড়া, সাধুহাটি, নাগপাড়া, হরিহরাসহ প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ  দৈনন্দিন প্রয়োজনে জিকে সেচ খালের ব্রিজটি পার হয়ে যেতে হয় খুলুমবাড়িয়া বাজারে। যে বাজারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ব্যাংক, কৃষকের পণ্য বিক্রির জন্য নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। শুধু তাই নয় কৃষকদের কৃষিকাজও ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা সজিবুল ইসলাম সজিব জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরে বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় যেতে হচ্ছে আমাদের এলাকার মানুষদের। এতে করে দুর্ভোগের পাশাপাশি যাতায়াতে করতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। তাই দ্রুত ব্রিজটি সংস্কার করে দুর্ভোগ লাঘবের দাবি জানাচ্ছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
স্থানীয় খুলুমবাড়িয়া বাজারে ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিন জানান, দীর্ঘ ৫ মাস ব্রিজ ভেঙে থাকায় প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ দৈনন্দিন প্রয়োজনে ইচ্ছা থাকলেও নিয়মিত বাজারে আসতে না পারায় আমাদের বাজারের ব্যবসায় বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। 
শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু জানান, এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে আছে বলে বাঁশের সাঁকো দিয়ে আপাতত চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বললেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সংস্কারের জন্য বরাদ্দপত্র প্রেরণ করা হয়েছে। যদি বরাদ্দ আসে তাহলে কাজ শুরু করা সম্ভব।
ষাটের দশকে শৈলকুপা উপজেলার চরপাড়া গ্রামের মানুষের চলাচলের কথা চিন্তা করে জিকে সেচ প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ঝিনাইদহ জেলা ছাড়াও কুষ্টিয়া ও রাজবাড়ী জেলার মানুষের চলাচলের সহজ মাধ্যম এই ব্রিজটি।

সিঁড়ি  বেয়ে উঠতে হয় ৮৫ লাখ টাকার সেতুতে
সংবাদদাতা, তালতলী, বরগুনা থেকে জানান, বরগুনার তালতলীতে প্রায় ৮৫ লাখ টাকার সেতুতে উঠতে হয় গাছের সিঁড়ি বেয়ে। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ শুরু হয়নি। সিঁড়ি বেয়ে উঠে এই সেতু পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী। এতে যেকোনো সময় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নামিশিপাড়া ও লাউপাড়া এলাকায় নিদ্রা নামক খালের ওপর ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪.২৭ মিটার প্রস্থ আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৮৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে মেসার্স সারা-প্রিন্স এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওই সেতু নির্মাণকাজের চুক্তি হয়। পরে গত ২০২১ সালে পুরনো সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে। ২০২২ সালে সেতুটির সম্পূর্ণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনো দুই পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেনি। বর্তমানে ওই সেতু থেকে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না। ফলে নামিশিপাড়া ও লাউপাড়া এলাকার দুই পাড়ের শত শত মানুষ রয়েছে চরম দুর্ভোগে। স্কুল-কলেজের শিকক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে নৌকায় পার হতে গিয়ে ভিজতে হয়েছে। এতে অনেকের স্কুল-কলেজসহ সাধারণের কাজে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হয়। বর্তমানে গাছ দিয়ে সিঁড়ি তৈরি করে তাতেই নতুন সেতু পার হচ্ছে এলাকাবাসী। সমতল থেকে প্রায় ৮ ফুট উঁচু সেতুতে সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করতে গিয়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।
ওই এলাকার মি. মংচিন থান, রাজু তালুকদার, মংচান ও খলিলুর রহমান মাস্টারসহ একাধিক স্থানীয়রা বলেন, সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় তাদের আশা ছিল জনভোগান্তি দূর হবে কিন্তু এখন উল্টো তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 
মেসার্স সারা-প্রিন্স এন্টারপ্রাইজ এর সত্বাধিকারী  মো.রিপন  কে মুঠো (০১৭১৩৫৪২৪২৩) ফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম বলেন, আমি চলতি বছরের জুনে যোগদান করেছি। তখন এই সেতুটির কাজ শেষ হয়েছে। তবে সংযোগ সড়ক করা হয়নি। তার কারণ বর্ষা মৌসুমে মাটির কাজ করতে না পারায় এই সমস্য হয়েছে। তবে বর্ষা গেলে দ্রুত কাজ শেষ করা হবে। কাজ শেষ না হলে ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে না।

×