
তিনশ’ টন পাথর নিয়ে মালবাহী ট্রেন সোয়া পাঁচ মিনিটে পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়
যাত্রী ট্রেনের পর এবার পদ্মা সেতু দিয়ে মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে মালবাহী ট্রেনের গতি পরীক্ষা হয়। দেশে প্রথমবারের মতো ৮০ কিলোমিটার গতিতে মালবাহী ট্রেন চলাচলে যুগান্তকারী ঘটনা। তাই নতুন এই রেল নেটওয়ার্ক অপার সম্ভাবনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। দক্ষিণের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ছাড়াও মালামাল এবং মোংলাবন্দরের পণ্য পরিবহন করা যাবে ট্রেনে। তাই ভারি মালামাল বহন উপযোগী করে নির্মাণ করা হয়েছে এই রেল ট্র্যাক। এটি ট্রান্স এশিয়া রেলওেেয়র সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ বলেন, ১০ অক্টোবর ঢাকা-ভাঙ্গা ৮২ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর যাত্রী এবং মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। ৬০ কিলোমিটার গতিতে মাওয়া-ভাঙ্গা ৪২ কিলোমিটার দূরত্ব মালবাহী ট্রেনের সময় লাগে ৫৪ মিনিট।
মাদারীপুর
৩শ’ টন পাথর নিয়ে মালবাহী ট্রেন পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছে সোয়া ৫ মিনিটে। ট্রেনটি ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া স্টেশন থেকে বিরতিহীনভাবে পদ্মা সেতু হয়ে মাদারীপুরের শিবচরের ২টি স্টেশন হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌঁছায় ৪৬ মিনিটে। এদিন ২ ধাপে ২ স্তরের গতিতে পরীক্ষা চালানো হয়। পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মাঝে সন্তোষ বিরাজ করছে। এর আগে শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতির রেকর্ড গড়ে পদ্মা সেতু দিয়ে সভলভাবে পরীক্ষামূলকভাবে চলে যাত্রীবাহী ট্রায়াল ট্রেন।
প্রতি বগিতে পাথর ছিল ৬০ টন। প্রথমে সকাল ৭টা ৩৮ মিনিটে ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে ট্রেনটি ভাঙ্গা স্টেশন থেকে ছেড়ে গিয়ে ৮টা ৩০ মিনিটে মাওয়া স্টেশনে পৌঁছায়। এ সময় পদ্মা সেতু পার হতে ট্রেনটি ৬ মিনিট ৩০ সেকেন্ড সময় নেয়। অপরদিকে মাওয়া স্টেশন থেকে ট্রেনটি সমপরিমাণ মালামাল নিয়ে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে ছেড়ে ৯টা ৫১ মিনিটে ভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছায়। ভাঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ৪৬ মিনিট। এ সময় পদ্মা সেতু পার হতে সময় লাগে মাত্র ৫ মিনিট ১১ সেকেন্ড। ট্রায়াল চলাকালে মধ্যকার কোনো স্টেশনেই থামেনি ট্রেনটি। দুর্ঘটনা এড়াতে রেলপথ জুড়ে ছিল পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ফরিদপুর
পদ্মা সেতুতে ২ দিনব্যাপী ট্রায়াল রান শেষ হয়েছে। শনিবার ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত পর্যন্ত পাথর বোঝাই করে পদ্মা সেতু পার হয়েছে সাত বগির মালবাহী ট্রায়াল স্পেশাল ট্রেন। এর আগে শুক্রবার দুই দফা যাত্রীবাহী ট্রেনের যাতায়াত করে।
সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতিতে যাত্রীবাহী ট্রেন চললেও মালবাহী ট্রেনের গতি ছিল সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ভাঙ্গা থেকে মাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। সেখান থেকে সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙ্গার উদ্দেশ্য আবার ছেড়ে আসে। এটিই প্রথম পদ্মা সেতু পার হয়ে মালবাহী ট্রেনের গতির ট্রায়াল। ট্রায়াল রানের আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা কিংবা অতিথি না থাকলেও এটা দেখতে ভাঙ্গা রেল স্টেশনে উৎসাহী মানুষের কমতি ছিল না।
ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ভাঙ্গা থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরের মাওয়া রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশ্য মালবাহী ট্রায়াল ট্রেনটি রওনা হয়। সকাল ৯টা ছয় মিনিটের দিকে সেটি মাওয়া স্টেশনে পৌঁছায়। এ সময় ট্রেনের গতি ছিল ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। এরপর মাওয়া থেকে ভাঙ্গার উদ্দেশে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রওনা হয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভাঙ্গায় আসে। সাতটি বগির এই মালবাহী ট্রেনটি ভাঙ্গা স্টেশনেই ছিল। এটিতে করে পদ্মাসেতুর রেল প্রকল্পের পাথর আনা নেওয়া করা হতো।