
গাছে পেরেক দিয়ে আটকানো পোস্টার
কুড়িগ্রামে বিভিন্ন সড়কের পাশের গাছে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাছের মধ্যে পেরেক মেরে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের পোষ্টার, ফেস্টুন ছেয়ে গেছে। পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয় তা দিয়ে পানি ও তার সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব প্রবেশ করে। এতে গাছে দ্রুত পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এতে অনেক গাছ মারাও যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই। মানুষের বন্ধু গাছের উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলছে এ অঞ্চলে। গাছগুলি যেন নীরবে কাঁদছে। কিন্তু কে শুনবে গাছের এ নীরব বোবা কান্না?
কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে বিভিন্ন সড়ক গুলোতে গাছের মধ্যে লাগানো বিজ্ঞাপন বোর্ডে সয়লাব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা সড়কে লাগানো ছোট বড় গাছের গায়ে লোহার পেরেক দিয়ে আটকানো হয়েছে অসংখ্য সাইন বোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড। বিভিন্ন গাছে ঝুলছে ব্যবসায়িক, চিকিৎসক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচার-প্রচারণার অসংখ্য ছোট-বড় সাইন বোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিজ্ঞাপন।
আরও পরুন:নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে
পিছিয়ে নেই বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং সেন্টারগুলোও। এসব ব্যানার, ফেস্টুন, বিজ্ঞাপন ঝোলানো হয়েছে পেরেক ঠুকে। এক একটি গাছ যেন এক একটি বিজ্ঞাপন বোর্ড। কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই যে যেখানে পারছে পেরেক ঠুকে গাছকে বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করছে। এতে বর্ষা মৌসুমে ছোট-বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় পথচারী ও যানবাহন গুলোকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজে, রাজারহাট উপজেলার নাজিমখা সড়কে রাজারহাট পাইলট, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজে রাস্তার দু’ধারে ছোট-বড় এবং মোটা-চিকন বিভিন্ন মূল্যবান গাছে শত-শত পোষ্টার, ফেস্টুন এবং রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ভরে গেছে। একই অবস্থা চিলমারী উপজেলা পরিষদ কার্যালয় চত্বরে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ফেস্টুনে নাম ঢেকে গেছে। নাগেশ্বরী উপজেলা পরিষদ চত্বরে নারিকেল গাছ সহ বিভিন্ন গাছে ফেস্টুন পেরেক দিয়ে লাগানো হয়েছে।
রাজারহাট কলেলেজের ছাত্র সাব্বির বলেন, নাজিমখা সড়কে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে আনুমানিক পাঁচশতাধিকেরও বেশি গাছে পেরেক দিয়ে পোষ্টার, ফেস্টুন লাগানো। নাগেশ্বরী উপজেলার বাসিন্দা মাহাবুব আলম বলেন, পুরো উপজেলার বিভিন্ন অফিস এবং গাছে শুধু নেতাদের ছবি দিয়ে পোষ্টারে সাটানো। এতে করে সরকারি অফিসের সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়। তা দিয়ে পানি ও তার সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব প্রবেশ করে। এতে গাছে দ্রুত পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
এতে করে গাছটি মারাও যেতে পারে। তাই কোনো গাছে পেরেক ঠোকা মানে ওই গাছের চরম ক্ষতি করা। গাছের প্রতি এই নিষ্ঠুর আচরণ দেশের বন আইনে দন্ডনীয় অপরাধ হওয়ায় কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে কার্যকরি পদক্ষেপ নেবার দাবী জানান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, জেলার মাসিক সম্বন্বয় মিটিং এ অবৈভাবে গাছে পোষ্টার, ফেস্টুন ইত্যাদি লাগানোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এগুলো অপসারণে দ্রুত কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এস