ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুই বাঙালি মার্কিন বিজ্ঞানীর মাসহ পাঁচ সংগ্রামী নারী শ্রেষ্ঠ জয়িতা

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ০০:২৯, ২ জুন ২০২৩; আপডেট: ১৬:০০, ২ জুন ২০২৩

দুই বাঙালি মার্কিন বিজ্ঞানীর মাসহ পাঁচ সংগ্রামী নারী শ্রেষ্ঠ জয়িতা

আমেরিকান দুই বাঙালি বিজ্ঞানীর মাসহ বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার পাঁচ সংগ্রামী নারীকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা

আমেরিকান দুই বাঙালি বিজ্ঞানীর মাসহ বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার পাঁচ সংগ্রামী নারীকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা দিয়েছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। সমাজের নানা প্রতিকূলতা ও নির্যাতন পেরিয়ে তারা সফলতা অর্জন করেছেন। বৃহস্পতিবার ১ জুন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান জানান, জীবন সংগ্রামে টিকে থেকে সফল হওয়া পাঁচজন নারীকে সরকার প্রতিবছর সম্মানজনক এই পদক দেয়। তাদের সংগ্রামী জীবনের গল্প হৃদয়স্পর্শী ও শিক্ষণীয়। জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ কর্মসূচির আওতায় এই কার্যক্রম চলছে। 
অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ॥ বাল্যবিয়ের শিকার সাবিনা ইয়াসমিন নানা প্রতিকূলতায় এমএ পাস করেও সরকারি চাকরি পাননি। তবু হতাশ হননি। সাবলম্বী হওয়ার অবিরাম প্রচেষ্টায় তিনি এখন অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী একজন নারী। এজন্য তাকে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা-২০২২ প্রদান করেছে। তিনি উপজেলার হিজলা ইউনিয়নের হিজলা গ্রামের কাজী হাবিবুর রহমানের মেয়ে। 
শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সফল নারী ॥ নিজের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করে নানা বাধার মুখে লেখাপড়া শিখে কৃষক কন্যা ফেরদৌসি পারভীন এখন প্রধান শিক্ষক। স্বামীর হঠাৎ মৃত্যুর পরেও তার জীবন সংগ্রাম থেমে যায়নি। শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সফলতার জন্য চিতলমারী উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর তাকে সম্প্রতি শ্রেষ্ঠ জয়িতা পুরস্কার-২০২২ সম্মাননা প্রদান করেছে। 
সাত ভাই-বোনের মধ্যে ছোট। ১৯৭১ সালে তার জন্ম। তখন মেয়েদের লেখাপড়ায় বাধা ছিল। তবু তারা তিন বোন লেখাপড়া করে। ৮ম শ্রেণিতে পড়াকালে দুই বোনের বিয়ে হয়।
সফল জননী আমেরিকান দুই বাঙালি বিজ্ঞানীর মা ॥ আমেরিকান দুই বাঙালি বিজ্ঞানীর মা শ্যামলী বিশ্বাস। তার পাঁচ সন্তানই উচ্চশিক্ষিত। নানা প্রতিকূলতায় সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত করতে অসামান্য ভূমিকা রাখায় ‘সফল জননী’ হিসেবে তাকে সম্প্রতি বাগেরহাট জেলা পর্যায় ও চিতলমারী উপজেলায় পর্যায় দুইটি শ্রেষ্ঠ জয়িতা-২০২২ সম্মাননা দিয়েছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। সরকারিভাবে সম্মানজনক এই পদক পেয়ে তিনি অভিভূত। এসএসসি পরীক্ষার্থী থাকা তার অবস্থায় বিয়ে হয়। ফলে তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি। তবে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছে সন্তানেরা। তারা সর্বোচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। 
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী ॥ লাবনী কাজী সীমাহীন নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন। তার সাহসী জীবন সংগ্রামের জন্য বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সম্প্রতি শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা-২০২২ প্রদান করে। তিনি উপজেলার হিজলা গ্রামের আব্দুল হান্নান কাজীর মেয়ে। লাবনী কাজী জানান, ২০০৭ সালে তার বিয়ে হয়। বিয়ের দুই বছরের মধ্যে ছেলে সন্তান হয়। তার স্বামী ও শাশুড়ি বাপের বাড়ি হতে বার বার টাকা আনতে চাপ দেয়।
সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানকারী নারী ॥ বাগেরহাট-চিতলমারী মহাসড়কের পাশে ৬২ শতক জমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য দান করে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন আশালতা ম-ল ওরফে আশালতা বালা। সমাজের আলো দানকারী এই নারী এখন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তার অসামান্য অবদানের জন্য চিতলমারী উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সম্প্রতি শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা-২০২২ প্রদান করে।

×