ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গরমে হাঁসফাঁস

ডাবের পানিতে ক্লান্তি দূর

সমুদ্র হক

প্রকাশিত: ২২:২৪, ৩১ মে ২০২৩

ডাবের পানিতে ক্লান্তি দূর

পথের ধারে ডাব বিক্রি করছেন বিক্রেতা

চড়া রোদ। টেকা কঠিন। অসহ্য গরম। হাঁসফাঁসে কাহিল। তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে। ঘামে পোশাক ও শরীর ভিজে গোসলের মতো। ডিহাইড্রেশনে কাবু। পথের ধারে ভ্যানগাড়ির ডাবওয়ালা হাঁক দেয়- কচি ডাবের পানি। ক্লান্ত পথিক ক্ষণিক দাঁড়ায়। এগিয়ে যায়। চড়া দাম শুনে হোঁচট খায়। উপায় না পেয়ে ডাবই ভরসা। কচি ডাবের পানির কথাই আলাদা। খুলনা মাগুরা বাগেরহাটের হলে তো পোয়াবারো। তবে সেন্টমার্টিন ও নারিকেল দ্বীপের ডাব আকারে যেমন বড় পানিও দুই আড়াই গ্লাস। নারিকেল দ্বীপের ডাব তো আর সহজে মেলে না। সুতরাং যা পাওয়া যায় তাতেই ক্লন্তি দূর। দেশের প্রতিটি অঞ্চলেই ডাবের গাছ আছে। মাটির গুণাগুণের ওপর একেক অঞ্চলের ডাবের পানির স্বাদ একেক রকম। মিষ্টি ও নোনতার মিশেল। কচি ডাবের রসই পানি পরিচিতি পেয়েছে। 
মাঝারি আকারের ডাব প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। বড় আকারের প্রতিটি ডাব ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকা দরে। যে ডাবের পানি সবচেয়ে বেশি তার দাম দুইশ’ টাকা। অভিজ্ঞ ডাব বিক্রেতারা ডাবের আকার দেখেই বুঝতে পারে। পানি বেশি না হলে টাকা ফেরত অথবা ওই ডাবের বদলে আরেকটি ডাব এমন প্রতিশ্রুতি দেয়। বগুড়া স্টেশন রোডের ধারে দীর্ঘদিন ধরে ডাব বিক্রি করছেন লুৎফর রহমান। খদ্দেরের সামনে দা দিয়ে ডাবের মুখ কেটে ও ছিলে খাবার জন্য রেডি করে দেন। জানালেন তার কাছ থেকে ডাব কিনে নিয়ে কমপ্লেন করেছে এমন সংখ্যা খুব কম। তবে কালেভদ্রে কেউ অভিযোগ দিলে আরেকটি ডাব দিয়ে দেন। হেসে বললেন ‘ভাই ডাব হলো পথ্য। অসুখ বিসুখ সারে। ডাবে কোন ভেজাল নাই। পানি কম-বেশি হয় এই যা।’ 
ডাবের ইতিহাস প্রাচীন। বিশুদ্ধ পানির অভাব পূরণ করত ডাব। বিশ্বের অনেক দেশে আজও ডাবের পানিকে স্পোর্টস ড্রিংকের চেয়েও বেশি মনে করা হয়।  নারিকেলের দ্রব্যগুণের সঙ্গে ডাবের গুণাগুণের মিল নেই। প্রতি এক শ’ গ্রাম ডাবের পানিতে ক্যালরির পরিমাণ ১৬ দশমিক ৭। কারও মতে যা ৭০ কিলো জুস (ডাবের রস)। নিরক্ষীয় অঞ্চলে পানীয় হিসেবে ডাবের রস সবচেয়ে জনপ্রিয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলোতে এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ডাবের জনপ্রিয়তা এতটাই বেশি যে ক্যানে ভরে ও বোতলজাত করে ডাবের পানি বিক্রি হয়। ডাবের পানিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ভিটামিন সি ও রিবোফ্লোভিন।

যাদের শরীরে ইলেকট্রলাইট কমে দুর্বল হয় তাদের বড় পথ্য ডাবের পানি। যা শরীরের ইলেকট্রলাইট ব্যালান্সড করে। গ্যাসটিসাইট এ্যাসিডিটি কিডনির পাথর হওয়া প্রতিরোধে ডাবের পানি সহায়ক। ডাবের পানির কিলোটিন স্নায়ুর নানা রোগ নিয়ন্ত্রনে ব্যালান্সড ফুড। দেশের সেন্টমার্টিন (প্রবাল দ্বীপ), ছেড়া দ্বীপ, ইনানী বিচে সুপেয় খাবার পানির তীব্র সংকট ছিল। ওই এলাকার লোকজনের কাছে সুপেয় পানির আধার পূরণ করেছে ডাব। নারিকেল দ্বীপ দারুচিনি দ্বীপে ডাবগাছ না থাকলে মানুষর বসবাস কঠিন হয়ে পড়ত।

×