
জাহিদ হাসান জনি
মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়ে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার পৌর শহরের দক্ষিণ ভান্ডারা গ্রামের জাহিদ হাসান জনি’র। তবে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পড়াশোনার খরচ। প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকের নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনার সময় সে স্বপ্ন দেখেছিল চিকিৎসক হওয়ার।
সে ধারাবাহিকতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করে। গত ১২ মার্চ প্রকাশিত মেডিক্যাল(এমবিবিএস) ভর্তি পরীক্ষায় সে উত্তীর্ণ হয়েছে। জাহিদ হাসান জনি দক্ষিণ ভান্ডারা গ্রামের মৃত মনিরুল ইসলাম টিপুর ছেলে। রংপুর মেডিক্যাল কলেজে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস পরীক্ষায় পরীক্ষা দিয়ে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মুনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ হয়েছে তার। সে পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭২ পেয়েছে। তার মেধাক্রমের অবস্থান ৩৮০১।
জানা গেছে, পরিবারে জনিসহ তার মা ও ১ বোন রয়েছে। জায়গা সম্পত্তি বলতে ভিটা বাড়িসহ মোট দেড় বিঘা জমি রয়েছে তাদের। ছোট বোন হাজী দানেশ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগে ১ম বর্ষে অধ্যায়নরত রয়েছে। আয়ের একমাত্র ব্যক্তি তাদের মা জরিনা বেগম। তার উপর দিয়ে পুরো সংসারসহ পড়ালেখার খরচ চলে।
জনির মা জরিনা বেগম বলেন, আমার ছেলে মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ পেয়েছে এ জন্য আমি খুব খুশি। অনেক কষ্ট করে ছেলে মেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছি। এ কারণে যে ছোট থেকেই তারা দুই ভাই-বোন পড়ালেখার প্রতি খুব আগ্রহী ছিল। তার মামাদের সহযোগিতায় এবং নিজে গরু পালনের পাশাপাশি কৃষি কাজ করে ছেলে মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। ছেলে মেডিক্যালে, মেয়ে হাজী দানেশ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবে। তাদের এখন খরচ বেশি হবে, এ খরচ কোথা থেকে জোগাড় হবে এ নিয়ে বেশ চিন্তায় রয়েছি। জীবনের সবটুকু পরিশ্রম দিয়ে হলেও ছেলে মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগানোর চেষ্টা করবো। কেউ যদি স্বেচ্ছায় সহযোগিতা করেন তাহলে তো ভালই হয়। তবে কারো কাছে হাত পাততে যাবো না।
মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পাওয়া জাহিদ হাসান জনি বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবা মারা গেছে। সে থেকে মা আমাদের অনেক সংগ্রাম করে লালন পালন করছে। পড়াশোনায় মামাদের সহযোগিতা পেয়েছি। মাধ্যমিক থেকেই স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। সে ধারাবহিকতায় শত কষ্টের মাঝেও পড়াশোনাটি চালিয়ে গেছি। মেডিক্যালে পড়াশোনা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। এত টাকা কিভাবে মা একাই জোগাড় করবে? তা নিয়ে বেশ টেনশনে রয়েছি। দেশের কোন বৃত্তবান ব্যক্তি যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে ভাল হয়।
এসআর