
ছবি: সংগৃহীত।
আজকের ব্যস্ত ও প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য অনেক সময় উপেক্ষিত থেকে যায়। পিতা-মাতারা যতটা না সন্তানদের শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখেন, মানসিক সুস্থতার বিষয়ে ততটা সচেতন নাও হতে পারেন। অথচ একটি সুস্থ মানসিকতা গড়ে উঠলে তবেই একটি শিশু আত্মবিশ্বাসী, সামাজিক এবং সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে। কিন্তু কখন বুঝবেন, আপনার সন্তানের পেশাদার মানসিক সহায়তা প্রয়োজন?
চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে যেসব লক্ষণ
১. হঠাৎ আচরণগত পরিবর্তন
সন্তান হঠাৎ করে যদি চুপচাপ হয়ে যায়, আগ্রহ হারিয়ে ফেলে পছন্দের কাজেও, বা আগের চেয়ে বেশি রেগে যায়—তবে এটি তার মানসিক অস্বস্তির ইঙ্গিত হতে পারে।
২. ঘুম ও খাওয়ার পরিবর্তন
খাবারে অনীহা, অতিরিক্ত খাওয়া বা না খাওয়া, ঘুম না আসা কিংবা অতিরিক্ত ঘুম—এগুলো মানসিক চাপ বা উদ্বেগের লক্ষণ হতে পারে।
৩. বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব
যদি সন্তান হঠাৎ করেই ঘরকুনো হয়ে যায়, কারো সঙ্গে কথা বলতে না চায় বা একাকীত্ব বেছে নেয়, তবে বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা দরকার।
৪. পড়াশোনায় মনোযোগের ঘাটতি
স্কুলে ফলাফল খারাপ হয়ে যাওয়া, একাগ্রতা হারিয়ে ফেলা বা শিক্ষকের কাছ থেকে নেগেটিভ রিপোর্ট আসা মানসিক চাপ বা অবসাদের ইঙ্গিত হতে পারে।
৫. নিজেকে ক্ষতি করার ইঙ্গিত
নিজেকে আঘাত করা, আত্মবিশ্বাসের চরম ঘাটতি বা 'আমি কাউকে দরকারি নই'—এমন কথা বললে তা অবহেলা করা বিপজ্জনক হতে পারে। দ্রুত মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
কি করবেন পিতা-মাতা হিসেবে?
- শুনুন মনোযোগ দিয়ে: সন্তান কী বলছে, তা মন দিয়ে শুনুন। তাকে বুঝতে দিন যে আপনি তার পাশে আছেন।
- অভিযোগ না করে বোঝান: সন্তানের আচরণে বিরক্ত না হয়ে, ভালোবাসা ও সহানুভূতির সঙ্গে তাকে বোঝান।
- পেশাদার সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না: কাউন্সেলর, স্কুল সাইকোলজিস্ট বা শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করতে পিছপা হবেন না।
- সুস্থ পারিবারিক পরিবেশ গড়ে তুলুন: রেগে না গিয়ে, খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সন্তানকে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগ দিন।
সন্তানের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করা মানে তার ভবিষ্যৎকে সুন্দর ও স্বাভাবিক করে তোলা। তাই কোনো সংকেতকে অবহেলা করবেন না। সময়মতো সহায়তা নিলে একজন শিশু আবারও আনন্দে ভরে উঠতে পারে।
নুসরাত