
ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার জেরে মাত্র দুইদিনেই ভারতের শেয়ারবাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে প্রায় ৮৩ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার)। চলমান সামরিক উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়ায় শুক্রবার (৯ মে) টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বড় ধরনের পতন দেখা যায় ভারতের শেয়ারবাজারে।
গত মাসে কাশ্মীরে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালায়। এর জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়, ফলে দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
এনএসই’র নিফটি ৫০ সূচক শুক্রবার ১.১ শতাংশ কমে গেলেও ২৪ হাজার পয়েন্টের ওপরে অবস্থান ধরে রেখেছে। বিএসই সেনসেক্স সূচকও একই হারে হ্রাস পেয়ে ৮০ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। সবচেয়ে খারাপ সময়টিতে বাজারের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।
গত বৃহস্পতিবার সূচকে ০.৫ শতাংশ পতন হয়, আর পুরো সপ্তাহ জুড়ে নিফটি ও সেনসেক্স সম্মিলিতভাবে ১.৩ শতাংশ কমেছে—যা চলতি বছরের টানা তিন সপ্তাহের ঊর্ধ্বগতির ধারাকে থামিয়ে দিয়েছে।
প্রফিটমার্ট সিকিউরিটিজের গবেষণা প্রধান অবিনাশ গোরাক্ষকর বলেন, "এতটা উত্তেজনার মধ্যে বিনিয়োগকারীরা স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। যদি পাকিস্তান আরও পাল্টা হামলা চালায়, তবে তা দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে পরিণত হতে পারে।"
তিনি আরও জানান, "বর্তমানে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়গুলো পেছনে পড়ে যাচ্ছে, যা বাজারের গতি কমপক্ষে এক সপ্তাহের জন্য বাধাগ্রস্ত করতে পারে।"
শুধু শেয়ারবাজার নয়, অন্যান্য সম্পদ শ্রেণিতেও এর প্রভাব পড়েছে। ভারতীয় রুপির মূল্য পতন ঠেকাতে রিজার্ভ ব্যাংককে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। ছোট ও মাঝারি মাপের কোম্পানির শেয়ারের দাম যথাক্রমে ১.৯ ও ০.৮ শতাংশ কমেছে।
তবে এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও গাড়ি নির্মাতা খাতে কিছুটা স্বস্তির বাতাস বইছে। যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির আশায় টাটা মোটরসের শেয়ার ৮.৭ শতাংশ বেড়েছে, যা তাদের ব্রিটিশ ইউনিট জেএলআরের ব্যবসায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। নিফটি ৫০ সূচকে দাম বাড়া ১১টি শেয়ারের মধ্যে এটি ছিল সবার শীর্ষে।
সূত্র: রয়টার্স
এম.কে.