
জ্যোতি হোসেন
তার হাত-পাসহ পুরো শরীর অবশ বা পক্ষঘাতগ্রস্ত। শুধু মুখ দিয়ে কথা বলতে পারেন। আর এভাবেই পরীক্ষা দিয়ে ঝিকরগাছা শহীদ মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজ থেকে অদম্য মেধাবী জ্যোতি হোসেন এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। প্রতিবন্ধীর কারণে নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বেশি পেয়েছিলেন। তবু তিনি সে সময় গ্রহণ করেননি বলে জানিয়েছেন। তার ইচ্ছা যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে।
পক্ষঘাতগ্রস্ত হওয়ায় পরীক্ষার রুমে শ্রুতি লেখক হিসেবে ছিলেন মরিয়ম খাতুন। পক্ষাঘাতগ্রস্ত জ্যোতি এভাবেই প্রাথমিক, এসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রতিবারই জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ঝিকরগাছা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের আব্দুল খালেক এবং রেক্সোনা হোসেন দম্পতির বড় মেয়ে এই জ্যোতি হোসেন। জ্যোতির মা রেক্সোনা হোসেন বলেন, আমার মেয়ে ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী। অসুস্থ হওয়ার পরও সে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছে।
পারবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। এর পর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির সময় কয়েকটি স্কুল তার শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে ভর্তি নিতে চায়নি। অবশেষে বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ঝিকরগাছা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। প্রতিদিন হুইল চেয়ার ঠেলে আমি তাকে নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করেছি। এভাবেই ওই স্কুল থেকে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। এরপর ঝিকরগাছা শহীদ মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। বুধবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে বেজায় খুশি জ্যোতি। জ্যোতি জানান, আমি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাই।