ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটাগামী পিকনিক বাসে অতিরিক্ত টোল আদায়, ক্ষুব্ধ পর্যটকরা 

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৩:৩৯, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩; আপডেট: ১৩:৫৮, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

কুয়াকাটাগামী পিকনিক বাসে অতিরিক্ত টোল আদায়, ক্ষুব্ধ পর্যটকরা 

টোল প্লাজা

পটুয়াখালীর কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল এই তিনিটি সেতু পারাপারে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পর্যটক বেড়েছে কুয়াকাটায়। বিশেষ করে সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার গড়ে শতাধিক পিকনিকের রিজার্ভ বাস আসা যাওয়া করে কুয়াকাটায়। 

ইজারাদারের লোকজন রাতে বাস চালকদের জিম্মি করে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত টোল আদায় করে থাকে। প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন রকমের ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে চালকদের টাকা দিতে বাধ্য করে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালও করে থাকে। এমন কী অতিরিক্ত পরিমাণ টাকা উল্লেখ করা রশিদও প্রদান করে। হয়রানির শিকার হয়ে বাস চালক ও পর্যটকদের মধ্যে দিন দিন ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতারিত হয়ে গন্তেব্যে ফিরে যাচ্ছে পর্যটকরা। 

এভাবে চলতে থাকলে কুয়াকাটা পর্যটন শিল্প প্রসারে বিরূপ প্রভাব পরার সম্ভাবনা আছে বলে মন্তব্য করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ৭৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে কলাপাড়া উপজেলা সদর থেকে কুয়াকাটার দুরত্ব ২১ কিলোমিটার। এর মধ্যে তিনটি নদীর উপর তিনটি সেতু রয়েছে। ঢাকা-পটুয়াখালী কুয়াকাটা মহাসড়কের কলাপাড়া শহর সংলগ্ন আন্দারমানিক নদীর উপর শেখ কামাল সেতু, হাজিপুর সোনাতলা নদীর উপর শেখ জামাল সেতু ও শীববাড়িয়া নদীর উপর শেখ রাসেল সেতু।চালক ও সুপারভাইজারদের অভিযোগে এবং রশিদে দেখা যায়, শেখ কামাল সেতুর রশিদে একটি বড় বাসের  (চেয়ারকোচ) ভাড়া ১৮০ টাকার স্থলে রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা। একই বাস গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার সময়ও রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা। একই ভাবে শেখ জামাল সেতুতে ৯০ টাকার স্থলে ভাড়া রাখা হয়েছে ১৮০ টাকা। গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার সময় আবারও ১৮০ টাকা রাখা হয়েছে। শেখ রাসেল সেতুতে ৯০ টাকার স্থলে একইভাবে ১৮০ টাকা রাখা হয়েছে। 

মিনিবাসে শেখ জামাল সেতুতে ১০০ টাকা ভাড়া নির্ধারিত থাকলেও আদায় করা হয়েছে ২৫০ টাকা। আর শেখ জামাল ও রাসেল সেতুর ৫০ টাকার স্থলে ১৮০ টাকা রাখা হয়েছে। চালক ও সুপারভাইজারের অভিযোগ সিন্ডিকেট করে তিনটি সেতুর টোল আদায় করে থাকে ইজারাদারা। এমন কী পুলিশ সদস্যরা ডিউটিতে থাকলেও তর্ক-বিতর্ক শুনে না দেখার ভান করে অন্যদিকে চলে যান। 

কুয়াকাটায় আসা পিকনিক বাসের চালকরা জানান, কলাপাড়া থেকে কুয়াকাটা পৌছতে শেষ তিনটা সেতুর টোল দিতে গিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক হয়েছে। টোলঘরে তাদের চাহিদা মতো অতিরিক্ত টোল দিতে না চাইলে অশ্রাব্য ভাষায় গালগালি করে টোল কর্তৃপক্ষ। 

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনস্ অব কুয়াকাটা (টোয়াক) এর সভাপতি ইমতিয়াজ তুষার বলেন, সপ্তাহের সরকারি ছুটির দিন গুলোতে শতাধিক পিকনিকের বাস আসে কুয়াকাটায়। কোন কোন শুক্রবার তারও বেশিও আসে। সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে যদি সেতুর টোল বেশি আদায় করা হয় সেটা প্রথমত এটা পর্যটকদের হয়রানির একটা অংশ। দ্বিতীয়ত কুয়াকাটার প্রতি পর্যটকদের যারা আসে তাদের একটা বিরূপ ধারণা তৈরি হয়। 

আমাদের জন্য একবারে একটা দুঃসংবাদ। এটা থেকে যে কোনভাবে হোক প্রশাসনিক অথবা যে কাঠামোওই হোক এটা বন্ধ করা উচিত বলে আমরা মনে করি।

শেখ রাসেল সেতুর ইজারাদার মেসার্স খান ট্রেডার্সের মালিক আবুল বাশার বলেন, অতিরিক্ত টোল আদায় করার বিষয়টি তার জানা নাই। কারো কাছ থেকে বাড়তি টোল আদায় না করার ব্যপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়া আছে।  

এ বিষয়ে পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহ বলেন, সরকারি ভাড়ার থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার ব্যপারে সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের ইজারা বাতিল করা হবে। 
 

 এসআর

×