
পুকুর খনন। ছবি: জনকণ্ঠ
জোরপুর্বক জমি দখল করে পুকুর খননের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুকুর খনন ও গাছ কাঁটতে বাধা দেয়ায় শাহিদা বেগম নামের এক গৃহবধুকে এসিড মেরে ঝলসে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে অদুদ মৃধা ও আফেজ হাওলাদার।
ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার কালিবাড়ী গ্রামে। পুলিশ পুকুর খনন বন্ধ করে দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন গৃহবধু শাহিদা বেগম। মঙ্গলবার শাহিদা বেগম আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এমন অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, উপজেলার কালিবাড়ী গ্রামের হতদরিদ্র মজিদ প্যাদা ও প্রভাবশালী আফেজ হাওলাদারের সঙ্গে ১০ একর ২৫ শতাংশ জমি নিয়ে গত ১০ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ জমি নিয়ে বরগুনা আদালতে মামলা করেন মজিদ প্যাদা। তার দখলীয় জমি আফেজ হাওলাদারের সহযোগী ওদুদ মৃধা পুকুর খনন ও বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করে।
এতে মজিদ প্যাদার ছেলে নজরুলের স্ত্রী মোসা. শাহিদা বেগম বাঁধা দেয়। এ বিষয়ে শাহিদা বেগম আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। পুলিশ এসে পুকুর খনন বন্ধ করে দিয়েছে। পুকুর খনন বন্ধ করে দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে অদুদ মৃধা ও আফেজ হাওলাদার শাহিদা বেগমকে এডিস মেরে ঝলসে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে শাহিদা বেগম পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মঙ্গলবার তিনি আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এমন অভিযোগ করেন।
শাহিদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার শ্বশুর মজিদ প্যাদা অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষ। তার ১০ একর ২৫ শতাংশ জমি প্রভাবশালী আফেজ হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক ভোগদখল করে আসছে। এ জমি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে।
সর্বশেষ আমার শ্বশুরের দখলীয় ৬০ শতাংশ জমি রয়েছে। ওই জমিতে আফেজ হাওলাদার তার সহযোগী অদুদ মৃধা পুকুর খনন ও বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করছে। আমি এতে বাঁধা দেয়ায় আমাকে এসিড মেরে ঝলসে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে।
গেল ১০ বছরে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে ৪টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমাকে বেশ কয়েকবার কুপিয়ে আহত করেছে। আফেজ হাওলাদার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। প্রতিনিয়ত বাড়িতে এসে আমার বৃদ্ধ শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আফেজ হাওলাদারের ভয়ে এলাকার কেউ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না।
মজিদ প্যাদা বলেন, মানের বাড়তে কাম হইর্যা খাই। রাইতে ঘরে ঘুমাইতে পারি না। মানষে ঢিলা মারে। ডর দ্যাহায় জাগায় ধারে গ্যালে মাইর্যা হারাইবে। দুই পোলা মানের ডরে বাড়ীইদ্দা পলাইয়্যা গ্যাছে। মোরো এ্যাহন বাড়ী গোনে নামতে কয়। বউডায়তো অগো ডরে বাড়ী আইতে পারে না। মোর জাগা ঠগাইয়্যা খাইয়্যা মোরো বাড়তে গোনো নামতে কয়। আল্লাহর ধারে কই আল্লায় য্যানো বিচার হরে।
অভিযুক্ত আফেজ হাওলাদার জমি নিয়ে আদালতে মামলার কথা স্বীকার ও এডিস মেরে হুমিক দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, অদুদ মৃধার কাছে জমি বিক্রি করেছি। ওই জমিতে অদুদ মৃধা পুকুর খনন কাজ শুরু করেছে। কিন্তু পুলিশ এসে খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে শালিস বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় জমি বিক্রি করা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালত জমি বিক্রি নিষেধ করেনি।
অদুদ মৃধার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আমতলী থানার ওসি এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। ঘটনা তদন্তে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসআর