ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কাউন্সিলর কার্যালয়ে দুদকের তল্লাশি

চট্টগ্রামে জন্মনিবন্ধন জালিয়াত চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

চট্টগ্রামে জন্মনিবন্ধন জালিয়াত চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে জন্মনিবন্ধন সনদ জালিয়াতির সংঘবদ্ধ চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ

চট্টগ্রামে জন্মনিবন্ধন সনদ জালিয়াতির সংঘবদ্ধ চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। চক্রটি এই পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরি করে তা বিতরণ করেছে। শুধু তাই নয়, তাদের মতো আরও একাধিক চক্র এ অবৈধ কার্যক্রমে সারাদেশে সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা প্রাথমিক স্তরের কর্মী বলে জানিয়েছে পুলিশ। চক্রের অন্যান্য সদস্য এবং হ্যাকারকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

এদিকে, জন্মনিবন্ধন জালিয়াতির সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের  (চসিক) কাউন্সিলর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার দুককের একটি টিম চসিকের ৫ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে কিছু নথি সংগ্রহ করেছে।  
সিএমপি সূত্র জানায়, গত সোমবার নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হল মো. জহির আলম (১৬), মোস্তাকিম (২২), দেলোয়ার হোসাইন সাইমন (২৩) ও মো. আব্দুর রহমান আরিফ (৩৫)। এদের মধ্যে আরিফের কম্পিউটারের দোকান রয়েছে পতেঙ্গার খাল পাড় পকেট গেইট এলাকায়। 
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ। তিনি বলেন, এদের পতেঙ্গা এবং ইপিজেডের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের ব্যবহৃত সকল ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে। আনুমানিক ৫ হাজারের বেশি জন্ম নিবন্ধন সনদ সৃজন করেছে এই চক্রটি।

গত ৮ জানুয়ারি ৩৮ নম্বর, ১৩ নম্বর এবং ২১ জানুয়ারি ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে ভুয়া নিবন্ধন করে নেওয়া হয় উল্লেখ করে থানায় ডায়েরি করলে অনুসন্ধানে নামে আমাদের টিম। আমরা বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এবং অনুসন্ধানে একাধিক চক্রের অস্তিত্ব পাই। এরই প্রেক্ষিতে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা স্বীকার করে যে, এই জালিয়াতি কার্যক্রমে জড়িত একাধিক গ্রুপ রয়েছে। একেকটি চক্রে ৩০ থেকে ১০০ জন কাজ করে।

দুদক সূত্র জানায়, কাউন্সিলর অফিসের আইডি হ্যাক করে জন্মনিবন্ধন করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি দুদকের নজরে আসায় তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সার্ভার বন্ধ থাকায় একেবারে ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। তবে কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, যা পর্যালোচনা করলে ধারণা পাওয়া যাবে। জালিয়াতির সঙ্গে কাউন্সিলর অফিসের কারও সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
পুলিশ জানায়, প্রতিটি ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করতে তারা ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকা নেয়।  এ জন্য তারা জন্ম সনদ নিতে আসা ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করে সরকারের নির্ধারিত ওয়েব সাইটে সাবমিট করে। পরে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে প্রাথমিক নিবন্ধন করে এবং এসব তথ্য একজন হ্যাকারকে দেয়। তখন হ্যাকার অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ করে জাল নিবন্ধন সনদ প্রস্তুত করে পুনরায় চক্রের এ সদস্যদের দেয়।  
মঙ্গলবার দুপুরে এ বিষয়ে সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, এ চক্রের ৪ সদস্য প্রাথমিকভাবে তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। 

×