ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মধুপুরে ভূয়া মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে জরিমানা

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল  

প্রকাশিত: ২০:২৬, ২৬ অক্টোবর ২০২২

মধুপুরে ভূয়া মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে জরিমানা

ভূয়া চিকিৎসক

চিকিৎসা বিদ্যায় নেই কোন পড়াশোনা। তবুও তিনি চিকিৎসক। তার ভিজিটিং কার্ডে লিখেছেন চিকিৎসা বিদ্যার নানা ডিগ্রির লম্বা লাইন। তার চিকিৎসাপত্রের প্যাডে নিজেকে মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞ হিসাবে নাম ছাপিয়েছে। তিনি ডিগ্রি লেখেছেন এমবিবিএস ঢাকা, পিজিটি শিশু, সিসিডি বারডেম, এফসিপিএস মেডিসিন। এই ডিগ্রি ও বিদ্যার পরিচয়ে দীর্ঘদিন যাবত চিকিৎসা প্রদানের নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন কথিত চিকিৎসক মাসুদ আহমেদ (৩৬) নামের এক ব্যক্তি। 

তিনি টাঙ্গাইলের মধুপুরে শাহজালাল ফার্মেসী ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রোগী দেখতেন। মধুপুর-জামালপুর মহাসড়কের পাশে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেইটের সামনে অবস্থিত শাহজালাল ফার্মেসী ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে তিনি রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা দিলে রোগীরা অন্যান্য ক্লিনিকে পরীক্ষা করাতে গেলে স্থানীয় ক্লিনিকের লোকজনের সন্দেহের সৃষ্টি হয়। 

স্থানীয়দের সন্দেহ ঘনিভূত হলে স্থানীয়রা প্রশাসনকে গোপনে সংবাদ দিলে বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট সহকারী কমিশনার (ভুমি) জাকির হোসাইন, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান পুলিশসহ শাহজালাল ফার্মেসী ও ডায়গনষ্টিক সেন্টারে অভিযান চালায়। 

এ সময় কথিত চিকিৎসক নামধারী মাসুদ আহমেদ তার ডাক্তারি পড়াশোনার কোন সনদপত্র দেখাতে পাড়েনি। মাসুদ আহমেদ তার ডাক্তরি বিদ্যার সনদপত্র দেখাতে নানা অযুহাত খুঁজতে থাকেন। 

সনদপত্র তার স্ত্রী নিয়ে চলে গেছে বলে মাসুদ জানায়। এ সময় মাসুদ আহমেদ এক এক সময় এক এক মেডিকেলে পড়াশোনার কথা জানান। পরে তাকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এক লাখ টাকা ও ক্লিনিকের মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কথিত চিকিৎসক মাসুদ আহমেদ বরিশালের মুলাদি উপজেলার বানীমর্দান গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।

১০০ শয্যা বিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সাইদুর রহমান জানান, মধুপুর উপজেলা হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী সন্দেহভাজন এফসিপিএস ডিগ্রিধারী একজন ডাক্তার শাহজালাল ডায়গানাষ্টিক সেন্টারে প্যাকটিস করেন বলে জানায়। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরসহ তিনি ওই ক্লিনিকে অভিযানে যান। এ সময় তিনি কথিত ডাক্তার মাসুদ আহমেদ নামে একজনকে ওই ক্লিনিকের চেম্বারে দেখতে পায়। এ সময় মাসুদ আহমেদ এক প্রশ্নের জবাবে জানায়, সে ঢাকা মেডিকেল থেকে এমবিবিএস ও এফসিপিএস ডিগ্রি নিয়েছেন। 

পরবর্তীতে জানা গেলো তিনি আদৌ কোন মেডিকেলে পড়াশোনা করেনি। বিষয়টি তিনি মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন করে জানান। পরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) সনদবিহীন ডাক্তার মাসুদ আহমেদকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। 

এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) জাকির হোসাইন জানান, কথিত ডাক্তার মাসুদ আহমেদ মেডিকেলে পড়াশোনা করেনি। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাকে জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় শাহজালাল ডায়াগনষ্টিকের মালিককেও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

 
 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×