ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দৈনিক জনকণ্ঠে সচিত্র সংবাদ প্রকাশের পর

হোজির নদী ও পদ্মনগর খালের বাঁধ-পাটা অপসারণ : এলাকাবাসীর উল্লাস

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ২০:৫২, ৫ জুলাই ২০২২

হোজির নদী ও পদ্মনগর খালের বাঁধ-পাটা অপসারণ : এলাকাবাসীর উল্লাস

হোজির নদী ও পদ্মনগর খালের বাঁধ

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার পদ্মনগন খালের অবৈধ বাঁধ-পাটা মঙ্গলবার দুপুর (০৫ জুলাই) থেকে অপসারণ শুরু হয়েছে এদিকে, সদর উপজেলার ডেমা এলাকায় হোজির নদীর অবৈধ বাঁধ নেট-পাটা মঙ্গলবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনেও অপসারণ চলছে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রবাহমান নদীর ২০ থেকে ২৫ স্থানে মাছ চাষ করছিল রছরের পর বছর ফলে, কৃষি কাজের মারত্মক বিপর্যয়, জলাবদ্ধতা, নৌচলাচল বন্ধ, পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছিল ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলে দৈনিক জনকণ্ঠে সচিত্র সংবাদ প্রকাশ গয় এরপর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান এঁর নির্দেশে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুছাব্বেরুল ইসলামের নেতৃত্বে নদীর বাঁধ-পাটা অপসারণ শুরু করা হয়

এসময়, উপজেলা ৎস্য, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি, জেলা পুলিশের সদস্য, ডেমা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন পর্যায়ক্রমে এই নদীর সব বাঁধ নেটপাটা অপসারণ করা হচ্ছে  দীর্ঘদিন পরে নদীটি অবমুক্ত হওয়ায় কৃষক-সহ স্থানীয় সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনুরূপ কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জীনাত মহলের নেতৃত্বে পদ্মনগর খালের বাঁধ-পাটা অপসারণ করায় সেখানে ভুক্তভোগীরা উল্লাস প্রকাশ করেছেন

স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই নদীটিতে বাঁধ দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাছ চাষ করতেন আমরা এই খাল থেকে একটা মাছও ধরে খেতে পারতাম না গ্রামবাসীর প্রয়োজনে এই খালে পানি ওঠানো নামানো হত না এই নদীর পানি ব্যবহার করা হত মাছচাষীদের সুবিধার্থে সরকারিভাবে নদীটির বাঁধ অপসারণ হওয়ায় আমরা খুবই খুশি হয়েছি

মোঃ আব্বাস নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, নদীর বাঁধ কাটায় আমাদের খুব ভাল হয়েছে এখন নদী থেকে মাছ ধরতে পারব, নদীতে গোসল করতে পারব, নদীতে নৌকা চালাতে পারব নিজেদের প্রয়োজনমত এই নদী ব্যবহার করতে পারব স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ আরজু বলেন, সরকারি নদী প্রশাসন অবৈধ দখলমুক্ত করেছে এতে এলাকার মানুষের উপকার হয়েছে

এলাকাবাসী একাধিক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ করে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা উপজেলা প্রশাসন থেকে পাঁচ বছর আগেও একবার এই নদী দখলমুক্ত করা হয়েছিল কিন্তু বাঁধ কেটে দেওয়ার কিছুদিন পরে আবারও বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু হয়, এটা দেখবে কে? পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে খনন কাজ শুরুর জন্য দেওয়া একাধি বাঁধ এখনও এই নদীতে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, গনমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পর হোজির নদীতে সকল বাঁধ, পাটা নেট অপসারণ করা হচ্ছে আমরা হোজির ব্রিজের নিচে দেওয়া বাঁধসহ এদিন / টি অবৈধ বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য স্থানে যেসব বাঁধ, নেটপাটা রয়েছে, সেগুলোও অপসারণ করা হবে প্রয়োজনে আরও দুইএকদিন এই নদীকে অবৈধ দখলমুক্ত করতে কাজ করা হবে এছাড়া ভবিষ্যতে কেউ যদি এই খালে অবৈধ বাঁধ দেয়, তা হলে ভ্রাম্যমান আদালদের মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, নদী-খাল দখল দুষন বন্ধে প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে দখলবাজরা যতই শক্তিশালী হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন

উল্লেখ, ২০০৯ সাল থেকে বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নে অবস্থিত সাড়ে কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের হোজির নদীর কিলোমিটারে বাঁধ দিয়ে সমন্বিতভাবে মাছ চাষ করতেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী ৩০ জুন থেকে জুন পর্যন্ত বিভিন্ন গনমাধ্যমে হোজির নদী দখল নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে এরপরেই এই অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে নামল প্রশাসন

 

×