নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী ॥ পটুয়াখালীর দশমিনার অনুদানবিহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় কর্মরত শিক্ষকগনের তথ্য প্রেরণে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিয়ম না মেনে তালিকা তৈরী ও ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কোন ধরনের আলোচনা না করেই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অর্থের বিনিময়ে এই তালিকা তৈরী করছেন বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ঠরা।
দশমিনা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে, দাখিল ও ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সারা দেশের মত দশমিনা উপজেলায় অনুমোদিত অনুদানপ্রাপ্ত/অনুদানবিহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার হালনাগাদ তথ্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
অনুদানবিহীন কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে যারা অনুদান প্রাপ্তির জন্য ইতোপূর্বে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন,তাদেরও নতুন করে আবেদন করতে হবে। আবেদন স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানের মাধ্যমে পরিচালনা কমিটির সভাপতির প্রতিস্বাক্ষরসহ আবেদন করতে পারবেন।
অভিযোগ রয়েছে, এই তথ্য প্রেরণে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিচ্ছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপাপ্ত) এম ডি আবুল বশার তালুকদার। এই সুযোগে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুরাতন শিক্ষকদের নাম বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষকদের ঢুকিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিও মোটা অংকের ঘুষ গ্রহন করছেন বলেও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, শুনছি আমাদের ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদের নামের তালিকা স্যারের (আবুল বশার) মাধ্যমে পাঠানো হলে আমাদের চাকুরি সরকারিকরণ করা হবে। এই কারণে বাধ্য হয়ে ধারকর্য করে স্যারকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। এরকম অভিযোগ অধিকাংশ ইবতেদায়ি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের। তারা অভিযোগ করেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকেও ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ৫০ টি ইবতেদায়ি মাদরাসা রয়েছে। এর মধ্যে ৪ টি এমপিওভুক্ত, ৩১ টি কোডভুক্ত ও ১৫ টি কোডভুক্ত নয়।
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম ডি আবুল বশার তালুকদারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা। এর সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
দশমিনার উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে একাধিক অভিযোগ এসেছে। শিক্ষা অফিসার আমার সাথে কোন ধরনের আলাপ আলোচনা না করে শিক্ষক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির কাছ থেকে টাকা নিয়ে তালিকা তৈরী করছে। এ বিষয়ে তাকে সতর্ক করা হয়েছে।’
আর দশমিনার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন,‘নিয়ম না মেনে তালিকা তৈরী ও শিক্ষকদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেয়ার বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে এবং তার অনেকটাই সত্যি। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধোত্বন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছি।’