ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লেবুখালীতে ৩১তম সেনানিবাস হচ্ছে শেখ হাসিনার নামে

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

লেবুখালীতে ৩১তম সেনানিবাস হচ্ছে শেখ হাসিনার নামে

আনোয়ার রোজেন ॥ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ উপকূলীয় এলাকা বরিশাল ও পটুয়াখালীতে কোন সেনানিবাস (ক্যান্টনমেন্ট) নেই। জাতীয় নিরাপত্তা ও কৌশলগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলটিতে প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে। সেনানিবাস না থাকায় দুর্যোগের সময় সহায়তা নিতে হয় প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরের যশোর সেনানিবাস হতে। এমন প্রেক্ষাপটে বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার পায়রা নদীর কাছে লেবুখালীতে নতুন একটি সেনানিবাস স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি হবে দেশের ৩১তম সেনানিবাস। এর নামকরণ হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে। এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলের প্রতিরক্ষা আরও সুদৃঢ় হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এজন্য ‘শেখ হাসিনা সেনানিবাস বরিশাল স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে এক হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) মঙ্গলবারের সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হতে পারে। ইতোমধ্যে একনেকের প্রকল্প তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবিবার পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, একনেকের অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসের সংশ্লিষ্ট শাখা প্রকল্পের কাজ শেষ করবে। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকার ঘোষিত ফোর্সেস গোল ২০৩০-এর আওতায় আন্তর্জাতিক মানের সেনানিবাস গড়ে তোলা হবে। তাছাড়া সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলকে জাতীয় প্রতিরক্ষাব্যুহে সন্নিহিত করা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা প্রদান ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে একটি সক্ষম, সুপ্রশিক্ষিত ও পেশাদার সেনাবাহিনীর কলেবর বাড়াতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (ভৌত অবকাঠামো বিভাগ) জুয়েনা আজিজ বলেন, সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দক্ষিণাঞ্চলের যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত সহায়তা করতে পারবে। এসব বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বর্তমানে নয়টি ডিভিশন এবং ৩০টি সেনানিবাস রয়েছে। স্বাধীনতাপরবর্তী সময় হতে যশোর সেনানিবাসে অবস্থিত ৫৫ পদাতিক ডিভিশন এ অঞ্চলের ২১ জেলার প্রতিরক্ষা, দুর্যোগ মোকাবেলা এবং স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করছে। বিদ্যমান বাস্তবতায় এ দায়িত্ব পালন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ায় নতুন সেনানিবাস স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ২৫ জুন প্রস্তাবিত সেনানিবাস স্থাপনে প্রাথমিক অনুমোদন দেন। সূত্র আরও জানায়, প্রস্তাবিত সেনানিবাসটি মোট এক হাজার ৫৩২ একর জমিত স্থাপিত হবে। এর মধ্যে ৫৬৭ একর জমি রাজস্ব বাজেটের আওতায় কেনা হয়েছে এবং অবশিষ্ট ৯৬৫ একর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। প্রকল্প এলাকাটি চরাঞ্চলে হওয়ায় এতে তেমন কোন জনবসতি গড়ে ওঠেনি। ফলে ঘরবাড়ি/স্থাপনার জন্য কোন ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনেরও প্রয়োজন হবে না। প্রস্তাবমতে সেনানিবাসে ১৬ হাজার ৯৯৭ জন জনবলের প্রাধিকার রয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পে প্রায় পাঁচ হাজার জনবলের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধা নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে ৯৬৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা।
×