
.
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ড্রয়ের পর সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। তবে কলম্বো টেস্টে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। জবাবে ৭৮ ওভার ব্যাটিং করে ২ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান সংগ্রহ করে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। ফলে লঙ্কানদের ৪৩ রানের লিডে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান ছাড়া বোলিংয়ে আর কেউ প্রভাব ফেলতে পারেনি। পাথুম নিশাঙ্কা অপরাজিত ১৪৬ ও প্রবাথ জয়াসুরিয়া ৫ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন।
জবাব দিতে নেমে পাথুম নিশাঙ্কা লাহিরু উদারা উদ্বোধনী জুটিতেই লাঞ্চের আগে তুলে নেন ৮৩ রান। বিরতির পর ৮৮ রানের মাথায় জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। তবে দ্বিতীয় সেশনে আর কোনো উইকেট পায়নি বাংলাদেশ। এমনকি তৃতীয় সেশন উইকেটশূন্য হিসেবেই শেষ হওয়ার পথে ছিল। এর মধ্যে নিশাঙ্কা তুলে নেন টানা দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। পাশাপাশি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের এটি চতুর্থ সেঞ্চুরি। তবে দ্রুত রান তোলার তাড়ায় দিনেশ চান্দিমাল নাঈম হাসানকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন লিটন দাসের হাতে, ভাঙে ১৯৪ রানের জুটি। আর তাতেই ৭ রানের আক্ষেপে ৯৩ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১৫৩ বল খরচায় ১০ চার ও ১ ছক্কায় ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি।
লঙ্কানদের ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন তাইজুল। ২৩.৩ ওভারে লাহিরু উদারাকে এলবিডব্লু করে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দিয়েছেন তিনি। আম্পায়ার এলবিডব্লুর আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। বল প্যাডে না ব্যাটে আগে আঘাত করেছে এই প্রশ্নের উত্তর মিলেছে ডিআরএসে। আর তাতেই বদলে যায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। সাজঘরে ফেরার আগে ৬৫ বলে ৪টি চারে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন এই লঙ্কান ব্যাটার।
এর আগে হতাশার একটা সেশন কাটে বাংলাদেশের। ৮ উইকেটে ২২০ রান নিয়ে দিন শুরু করা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দল ৭৯.৩ ওভার খেলে অলআউট হয় ২৪৭ রানে। সকালে শেষ দুই উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিনে ২৭ রান যোগ করে বাংলাদেশ। যার বেশিরভাগই নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। তবে ৮ উইকেট ২২০ রান নিয়ে শুরুর পর দিনের চতুর্থ ওভারে আসিতা ফার্নেন্দোর এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন ইবাদত হোসেনকে। ১৩ বলে ৪ রান করে আউট হন তিনি। সোনাল দিনুশার বলে মারতে গিয়ে তাইজুল আউট হলে ২৪৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। কন্ডিশন ও পরিস্থিতি বিচারে ৬০ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন তাইজুল। শেষ দুই উইকেট জুটিতে ইবাদত হোসেন ও নাহিদ রানাকে নিয়ে ৩৩ রান যোগ করেন তাইজুল। শেষ তিন উইকেট জুটিতে বাংলাদেশ যোগ করতে পারে ৫০ রান।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া টাইগারদের গল্পটা সেই পুরনো ব্যাটিং ব্যর্থতার মতো। এই ম্যাচে ব্যর্থ প্রথম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইতিহাস গড়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আশা জাগিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি আরেক সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম। প্রথম আট ব্যাটসম?্যানের ছয় জন দুই অঙ্কে পা রাখলেও একজনও ফিফটি পাননি। ত্রিশের ঘরে আটকে গেছেন তিন জন, বিশের ঘরে দুই জন। সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেছেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। আরও একবার নিদারুণ ব্যর্থ এনামুল হক বিজয়। শূন্য রানে জীবন পেয়েও শূন্য রানেই সাজঘরে ফিরেছেন এ ওপেনার। সর্বোপরি কলম্বোয় সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কান বোলারদের দাপটের বিপরীতে শান্তরা কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন।
সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশের ওপেনারদের নতুন বলে চেপে ধরেন আসিথা ফার্নান্দো ও বিশ্ব ফার্নান্দো। প্রথম ৪ ওভারে রান আসে ৫। এর মধ্যে একবার কিপার কুসাল মেন্ডিসের হাতে জীবন পান বিজয়, পরের বলে একটুর জন্য ধরা পড়েননি তিনি স্লিপে। তবে রান করার আগেই তিনি আসিথা ফার্নান্দোর বল টেনে স্টাম্পে এনে বোল্ড হন। আগের টেস্টের প্রথম ইনিংসের মতো এবারও আউট হন ১০ বলে শূন্য করে। সাদমান ইসলাম ও মুমিনুল হকের জুটি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েও শেষ হয়ে যায়। লঙ্কান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার প্রথম বলে উইকেট হারান মুমিনুল (২১)। বিশ্ব ফার্নান্দোর স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট পেতে দিয়ে আউট হন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (৮)। আগের টেস্টের মতো আলগা শটে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে উইকেট বিলিয়ে দেন সাদমান ইসলাম (৪৬)।
প্যানেল