
ছবি: সংগৃহীত
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনে শেষ ২ উইকেটে ২৭ রান যোগ করার পর ৭৯.৩ ওভারে শেষ হয় নাজমুল হোসেন শান্তর দলের ইনিংস। লোয়ার অর্ডারে তাইজুল ইসলামের লড়াকু ব্যাটিং কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।
প্রথম দিনের চিত্র
বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম দিনে আলোক স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ৭১ ওভারে ৮ উইকেটে ২২০ রান করেছিল বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলাম ৯ এবং এবাদত হোসেন ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ।
বাজে শুরু বাংলাদেশের টপ অর্ডারের
দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় অত্যন্ত রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলা শুরু করেন। কিন্তু বিজয়ের শুরুটা ছিল হতাশাজনক। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আসিথা ফার্নান্দোর বলে ব্যাটের ভেতরের কাণায় লেগে বোল্ড হয়ে তিনি ১০ বলে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন। এটি তার সর্বশেষ তিন টেস্ট ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মতো 'ডাক' (শূন্য রান) মারা। আউট হওয়ার আগেও তিনি দুইবার জীবন পেয়েছিলেন—তৃতীয় ওভারে আসিথার বলেই কুশল মেন্ডিস তার ক্যাচ ফেলে দেন এবং পরের বলে তৃতীয় স্লিপে আবারও ক্যাচ তোলেন। কিন্তু দুটি জীবন পেয়েও বিজয় তা কাজে লাগাতে পারেননি।
এরপর মুমিনুল হক উইকেটে সেট হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৩৯ বলে ২১ রান করে তিনি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় উইকেটে ৩৮ রানের জুটি ভাঙে এবং দলীয় ৪৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায়।
দ্রুত উইকেট হারানো ও বৃষ্টি বিরতি
তৃতীয় উইকেটে সাদমান ও শান্ত ৩১ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু মাত্র ২ রানের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটারের উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের ২৮তম ওভারের শেষ বলে ৮ রান করে শান্ত এবং ২৯তম ওভারের শেষ বলে ৯৩ বলে ৪৬ রান করে সাদমান আউট হন। দলীয় ৭৬ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
৩৩.২ ওভারের খেলা শেষে বৃষ্টি নামে এবং টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ বৃষ্টির শুরুর আগে ৪ উইকেটে ৯০ রান করেছিল। প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবার খেলা শুরু হয়।
মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা ও তাইজুলের লড়াই
বৃষ্টির পর লিটন দাস এবং মুশফিকুর রহিমের জুটি আশা জাগিয়েছিল, কিন্তু লিটনের ভুলে ৬৭ রানের বেশি বড় হয়নি সেই জুটি। ৫৬ বলে ৩৪ রান করে সোনাল দিনুশার বলে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। এর আগের ওভারেই প্রভাত জয়সুরিয়াকে স্লগ করতে গিয়েও লিটন ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন, যা ফসকে গিয়েছিল।
মুশফিকুর রহিম (৩৫) দলের বিপদের মুখে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন, যা দৃষ্টিকটু ঠেকেছে। এর আগে ব্যক্তিগত ৮ রানেও তিনি স্লগ সুইপে ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়েছিলেন।
চোট কাটিয়ে দলে ফেরা মেহেদী হাসান মিরাজ (৩১) ও নাঈম হাসানকে (২৫) নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও, বিশ্ব ফার্নান্ডোর বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দেন মিরাজ। ২৫ রান করে বোল্ড হন নাঈম হাসান।
দ্বিতীয় দিনের সকালে আসিথা ফার্নান্দোর বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন এবাদত হোসেন (৮)। শেষ পর্যন্ত তাইজুল ইসলাম একাই লড়াই করেন এবং ৬০ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৩৩ রান করে সোনাল দিনুশাকে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন। তার লড়াকু ইনিংসই বাংলাদেশকে আড়াইশর কাছাকাছি নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
সাব্বির