ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

হতাশার ব্যাটিংয়ে শুরু কলম্বো টেস্ট

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০০:৫৮, ২৬ জুন ২০২৫

হতাশার ব্যাটিংয়ে শুরু কলম্বো টেস্ট

ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতার দিনে লড়েছেন কেবল সাদমান ইসলাম, করেছেন সর্বোচ্চ ৪৬ রান (বাঁয়ে)। মুমিনুলকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কান ফিল্ডারদের উল্লাস

গলে ড্র টেস্টে তিন সেঞ্চুরি ও একটি প্রায় সেঞ্চুরির তৃপ্তি নিয়ে কলম্বো টেস্টের শুরুতেই এই হাল! বুধবার বৃষ্টিবিঘিœত প্রথম দিনে খেলা হয়েছে ৭১ ওভার, ৮ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২২০ রান। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া টাইগারদের গল্পটা সেই পুরনো ব্যাটিং ব্যর্থতারÑ গলে ব্যাটাররা যেন  ভুল করে ঝলক দেখিয়েছিলেন! ব্যর্থ প্রথম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইতিহাস গড়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আশা জাগিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি আরেক সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম।

প্রথম আট ব?্যাটসম?্যানের ছয় জন দুই অঙ্কে পা রাখলেও একজনও ফিফটি পাননি। ত্রিশের ঘরে আটকে গেছেন তিন জন, বিশের ঘরে দুই জন। সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেছেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। আরও একবার নিদারুণ ব?্যর্থ এনামুল হক বিজয়। শূন?্য রানে জীবন পেয়েও শূন?্য রানেই সাজঘরে ফিরেছেন এ ওপেনার। সর্বোপরি কলম্বোয় সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কান বোলারদের দাপটের বিপরীতে শান্তরা কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন।
সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশের ওপেনারদের নতুন বলে চেপে ধরেন আসিথা ফার্নান্দো ও ভিশ্ব ফার্নান্দো। প্রথম ৪ ওভারে রান আসে ৫। এর মধ্যে একবার কিপার কুসাল মেন্ডিসের হাতে জীবন পান বিজয়, পরের বলে একটুর জন্য ধরা পড়েননি তিনি স্লিপে। তবে রান করার আগেই তিনি আসিথা ফার্নান্দোর বল টেনে স্টাম্পে এনে বোল্ড হন। আগের টেস্টের প্রথম ইনিংসের মতো এবারও আউট হন ১০ বলে শূন্য করে।

সাদমান ইসলাম ও মুমিনুল হকের জুটি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েও শেষ হয়ে যায়। লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভার প্রথম বলে বাজে ডেলিভারিতে আরও বাজে শটে উইকেট হারান মুমিনুল (২১)। ভিশ্ব  ফার্নান্দোর স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট পেতে দিয়ে আউট হন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (৮)। আগের টেস্টের মতো আলগা শটে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে উইকেট বিলিয়ে দেন দারুণ খেলতে থাকা সাদমান ইসলাম (৪৬)। ৭৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস। তবে দুজনই জীবন পেলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউ। লিটন জীবন পান ২ ও ৩৩ রানে।

দুবারই তার ক্যাচ ছাড়েন প্রাবাথ জয়সুরিয়া। তাকে ৩৫ রানে ফিরিয়ে প্রথম টেস্ট উইকেটের স্বাদ পান অভিষিক্ত স্পিনিং অলরাউন্ডার সোনাল দিনুশা। জুটি থামে ৬৭ রানে। সুইপ খেলে ৮ রানে জীবন পাওয়া মুশফিক সুইপেই উইকেট হারান ৩৫ রানে। দিনুশা পান দ্বিতীয় উইকেট। সপ্তম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান যোগ করেন ৩৭ রান।  মিরাজ স্লিপে ধরা পড়েন ৩১ রান করে। একপ্রান্তে লড়াই করে যাওয়া নাঈমকে (২৫) শেষ বিকেলে দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড করেন আসিথা। 
দিনের বাকি সময় পার করে দেন তাইজুল ইসলাম ও দুই বছর পর টেস্ট খেলতে নামা এবাদত হোসেন।  প্রথম দিনের উইকেটে বোলারদের জন?্য বেশ সুবিধা ছিল। তবে নাঈম হাসান ছাড়া আর কেউ খুব ভালো বলে আউট হননি। বেশিরভাগই অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে আলগা শটে উইকেট দিয়ে এসেছেন। এর মাশুল দিয়ে আড়াইশর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছে বাংলাদেশ। ৯ রানে ব?্যাট করছেন তাইজুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন খেলছেন ৫ রানে।

দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আসিথা ফার্নান্দো, ভিশ্ব ফার্নান্দো ও অভিষিক্ত অলরাউন্ডার সোনাল দিনুশা। বিজয়ের কথা আলাদা করে না বললেই নয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দিতে ‘ওস্তাদ’ কিন্তু যখন বাংলাদেশের জার্সিতে খেলতে নামেন, তখন তাকে খুঁজেই পাওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একের পর এক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারছেন না।

×