
ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে দুদেশের দুই অধিনায়ক
ঘরের মাঠে সর্বশেষ ১৫টি দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজের মধ্যে মাত্র দুটি হেরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দুটি সিরিজ হারই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১৬ সালে ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর মাত্র কয়েকদিন আগে তাদের কাছেই হেরেছে স্বাগতিক টাইগাররা। এবার সিরিজ জয়ের ধারায় ফিরতে চায় বাংলাদেশ দল। সামনে প্রতিপক্ষ কিছুটা কম শক্তিধর আয়ারল্যান্ড। কিন্তু এই দলটি যে বিপজ্জনক তাতে কোনো সন্দেহই নেই। কারণ র্যাঙ্কিংয়ে খুব বেশি পিছিয়ে নেই তারা এবং ধারাবাহিকভাবেই ওয়ানডে ক্রিকেটে বড় দলকে হারানোর সক্ষমতা দেখিয়ে যাচ্ছে। আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে সেই আইরিশদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
২০০৮ সালে সর্বশেষবার আয়ারল্যান্ড দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলে বাংলাদেশের মাটিতে। সেদিক থেকে ১৫ বছর পর আবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নামার আগে বড় রকমের অনুপ্রেরণা তারা পেয়েছে প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশকে ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে। তাই তারাও জয় পেতেই নামবে।
২০১৪ সালের টি২০ বিশ^কাপ খেলে যাওয়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশ সফরে এসেছে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল। সেবার এই সিলেটেই খেলেছে তারা। তবে দ্বিতীয় প্রাথমিক রাউন্ড পেরোতে পারেনি হল্যান্ডের কাছে অবিশ^াস্য এক পরাজয়ে। সেই দুঃসহ স্মৃতির ৯ বছর পর আবার সিলেটে ফিরেছে আইরিশরা। দলটির কয়েকজন এবারও আছেন। এবার সিলেটে অবশ্য ওয়ানডে ফরম্যাটে খেলবে তারা। ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা প্রথমবার হবে এখানে আইরিশদের। এই ভেন্যুতে স্বাগতিক বাংলাদেশের সাফল্য শতভাগ। এখানে ৪ ওয়ানডে খেলে সবই জিতেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একটি এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩টি ওয়ানডে খেলেছে এখানে বাংলাদেশ। তবে ২০২০ সালের পর সিলেটে আর কোনো ওয়ানডে হয়নি। ৩ বছর পর আজ আবার এই ভেন্যুতে ওয়ানডে গড়াচ্ছে। এখানে সাধারণত হাই স্কোরিং ম্যাচই হয়েছে।
৩ ম্যাচে এখানে আগে ব্যাট করে তিন শতাধিক রানের সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ। তবে সফরকারী দলগুলো বেশ ভুগেছে। এবার মূল ভেন্যুর উইকেট কেমন হবে তা অবশ্য এখুনি বলা যাচ্ছে না দীর্ঘ সময় ম্যাচ না হওয়ায়। তবে গ্রাউন্ড-২ এবার আয়োজন করেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বিসিবি একাদশের প্রস্তুতি ম্যাচ। সেখানে ব্যাটাররা বেশ সহায়তা পেয়েছেন। আর আইরিশ ব্যাটাররা ঝড়ো ব্যাটিং উপহার দিয়ে নিজেদের আত্মবিশ^াস বাড়িয়ে নিয়েছেন। বড় জয়ও পেয়েছে সফরকারীরা পরে দারুণ বোলিং নৈপুণ্যে। সেই জয়ে আত্মবিশ^াসী হয়েই আজ প্রথম ওয়ানডেতে নামবে তারা। উদ্বোধনী ব্যাটার অভিজ্ঞ পল স্টার্লিং, জর্জ ডকরেল ছাড়াও অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নি ও পেস অলরাউন্ডার কার্টিস ক্যাম্ফার বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবেন স্বাগতিকদের। আইরিশদের বিপক্ষে এর আগে বাংলাদেশ মাত্র ২টি দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে। প্রথমবার বাংলাদেশ সফরে ২০০৮ সালে আসে আয়ারল্যান্ড। সেবার আইরিশদের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে টাইগাররা। কিন্তু ২০১০ সালের পরের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে আয়ারল্যান্ড সফরে ১-১ সমতায় শেষ করে দেশে ফেরে বাংলাদেশ। এরপর দুই বিশ^কাপে এবং দুইবার আয়ারল্যান্ডের মাটিতে হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে দুই দলের সাক্ষাৎ হয়েছে। সবমিলিয়ে ১০ ওয়ানডেতে পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ ৭ বার জিতেছে বার আয়ারল্যান্ডের জয় ২টি। তবে ২০১৯ সালের পর এই প্রথম আবার ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল। ১৩ বছর পর আবার কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে নেমে বাংলাদেশের লক্ষ্য সিরিজ জয়। কারণ সম্প্রতিই ইংল্যান্ডের কাছে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরে এখন মরিয়া স্বাগতিকরা সিরিজ জিততে। ঘরের মাটিতে টানা ৭টি ওয়ানডে সিরিজ জেতার পর ইংলিশদের কাছে হেরে গেলেও টি২০ সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করে উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল। তবে এই সিরিজে চলবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। কারণ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে কয়েকজন বাদ পড়েছেন। আর ফিরেছেন ইয়াসির রাব্বি, শরিফুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ। তাছাড়া ব্যাটিং অর্ডারেও কিছুটা অদল-বদল করা হতে পারে। দলের প্রয়োজনমাফিক সাকিব আল হাসানকে যে কোনো পজিশনে খেলানো হতে পারে। এছাড়া আফিফ হোসেন ধ্রুবর সাম্প্রতিক ফর্ম তেমন ভালো না হওয়ায় তার ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনা এবং তার বদলে অন্যদের পরীক্ষা করে দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ইয়াসির ছাড়াও নতুন দুই মুখ রনি তালুকদার ও তৌহিদ হৃদয়ের সুযোগ মিলতে পারে। আজ প্রথম ওয়ানডের একাদশে মেহেদি হাসান মিরাজ নাও থাকতে পারেন। অনুশীলনে চোখে ফুটবলের আঘাত পেয়েছেন তিনি। তাই তাকে বিশ্রাম দিয়ে অন্য কাউকে খেলাতে পারে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে লক্ষ্য একটাই সিরিজ জয়।