
দ্বিতীয় টি২০তে লিটনদের ব্যাটিং ব্যর্থতার মাঝে লড়লেন কেবল তানজিম সাকিব
সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি২০ সিরিজ হারের পর পাকিস্তান সফরেও ব্যাটিং-বোলিং ব্যর্থতায় ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশের। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হারল টাইগাররা। তবে ব্যাটাররা সবাই ব্যর্থ হলেও নয় নম্বরে নেমে বিশ^রেকর্ড গড়লেন অলরাউন্ডার তানজিম হাসান সাকিব। হোয়াইটওয়াশ এড়াতে আজ লাহোরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি২০তে মাঠে নামবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
লাহোরে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি২০তে পাকিস্তানের দেওয়া ২০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪৪ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। এতে ৫৭ রানে হেরেছে লিটন কুমার দাসের দল। প্রথম ম্যাচে ৩৭ রানে হেরেছিল স্বাগতিকরা। ফলে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে সিরিজ খোয়াল টাইগাররা। তবে দল হারলেও নয় নম্বরে নেমে ৩১ বলে ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তানজিম সাকিব। টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের ক্রিকেটার হিসেবে টি২০তে নয় নম্বরে নেমে হাফ সেঞ্চুরি করার একক কীর্তি এখন তার দখলে। এই ইনিংসে এক চারের সঙ্গে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।
দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শাহিবজাদা ফারহানের ৭৪, মোহাম্মদ হারিসের ৪১ ও হাসান নওয়াজের ৫১ রানের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ২০১ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। বল হাতে তানজিম সাকিব ও হাসান মাহমুদ শিকার করেন ২টি করে উইকেট। রিশাদ নেন একটি।
জবাবে মারমুখী মেজাজে শুরু করেন বাংলাদেশ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। তবে ৩ ওভারে ৩৮ রান আসার পর চতুর্থ ও পঞ্চম ওভারে দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় তানজিদ ১৯ বলে ৩৩ ও পারভেজ হোসেন ৮ রানে আউট হন। এরপর নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৭৭ রানে সপ্তম উইকেট পতনে হারের শঙ্কায় পড়ে টাইগাররা। এসময় শততম টি২০ খেলতে নামা অধিনায়ক লিটন দাস ৬, তাওহিদ হৃদয় ৫, জাকের আলি শূন্য, শামিম হোসেন ৭ ও রিশাদ ১ রান করেন। শেষদিকে ঝড় তোলেন তানজিম।
এই হারে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি থেকে দুঃসংবাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। টি২০ র্যাঙ্কিংয়ের সর্বশেষ হালনাগাদে এক ধাপ অবনতির পর ১০-এ নেমে গেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। সম্প্রতি টি২০ না খেললেও একধাপ উন্নতি হয়েছে আফগানিস্তানের। রশিদ খানের দলটির বর্তমান অবস্থান নবম।
ম্যাচের পর হারের ব্যাখ্যায় অধিনায়ক লিটন দাস বলেন, ‘যে ভালো ব্যাটিং শুরু করে, তার উচিত ১৩-১৪ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করে যাওয়া। চার ওভারের পর আমরা ভালো খেলিনি, পরপর উইকেট হারিয়েছি। কিন্তু ক্রিকেটে আপনাকে বেসিক কাজগুলো করতে হবে এবং আমরা এই মুহূর্তে সেটা করছি না (নিজের আউটের আগে বিটুইন দ্য উইকেটে রান)। যদি পরপর উইকেট পড়ে, তাহলে রান নেওয়া যায় না। তাই আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। কিন্তু আমাদের এখানে মনোযোগ দিতে হবে।’
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে শরিফুল ইসলাম বল হাতে নেন। তৃতীয় বল করে একটি শট থামাতে গিয়ে বেকায়দায় পা পড়ে কুচকিতে চোট পান তিনি। আর মাঠে দেখা যায়নি তাকে। এই পেসারকে হারানোর পর বাংলাদেশ ধাক্কা খেয়েছে মনে করে লিটন বলেন, ‘ আমার মনে হয় শরিফুল যখন চোট পেল, ওই সময় মোমেন্টাম পুরোপুরি সরে গেছে। আমাদের বোলিংয়ে ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। তবুও আমরা ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়ালাম।’
শেষ ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে লিটন বললেন, ‘আমাদের আরেকটি সুযোগ আছে। এখন আমাদের বসে কথা বলতে হবে। কীভাবে আমরা শক্তিশালী হয়ে ফিরতে পারি সেটা ভাবতে হবে। এটা মানসিকতার ব্যাপার।’