ছবিঃ সংগৃহীত
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দ্রুত অগ্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে যাচ্ছে সাইবার অপরাধ। এখন আর প্রতারণা সীমাবদ্ধ নেই কেবল সাধারণ ফিশিং ইমেইলে। ডিপফেইক, সোশাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো আধুনিক টুল ব্যবহার করে অনলাইন প্রতারকরা বিশ্বস্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ছদ্মবেশে ফাঁদ পেতে রাখছে সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্য।
বিশ্বজুড়ে সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ম্যাকাফি জানায়, কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ দেখে অনলাইন স্ক্যামারদের শনাক্ত করা সম্ভব। সচেতন থাকলে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচা যেতে পারে অনেকাংশেই।
চেনার ৫টি উপায়:
১. অপ্রত্যাশিত পুরস্কার বা নগদ অর্থ:
আপনি যদি হঠাৎ কোনো মেসেজ পান, যেখানে বলা হয় "আপনি মোটা অংকের টাকা জিতেছেন", তাহলে সাবধান হোন। এসব মেসেজের মাধ্যমে আপনার ব্যাংক তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে স্ক্যামাররা।
২. অস্বাভাবিক অর্থ পরিশোধ মাধ্যম:
প্রতারকরা প্রায়ই গিফট কার্ড, মানি অর্ডার, ক্রিপ্টোকারেন্সি বা এমন কোনো মাধ্যমে টাকা চাইবে যা ট্র্যাক করা কঠিন এবং ব্যবহারকারীর জন্য সুরক্ষাহীন।
৩. আইনি ভয় বা পারিবারিক বিপদের নাটক:
অনেকে ভয় দেখিয়ে জরিমানা বা জরুরি পরিস্থিতির কথা বলে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে। যেমন, বলা হয় আপনার ভাই দুর্ঘটনায় পড়েছেন কিংবা যদি এখনই টাকা না দেন, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
৪. ছদ্মবেশী সরকারি পরিচয়:
অনেক সময় স্ক্যামাররা নিজেদের সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি দাবি করে। এমনকি কলার আইডিতে ভুয়া নম্বর দেখিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা সৃষ্টি করে। তারা হয় ভয় দেখায়, নয়ত জরুরি কাজের কথা বলে অর্থ আদায় করতে চায়।
৫. ত্রুটিপূর্ণ ভাষা ও ব্যাকরণ:
স্ক্যাম মেসেজ বা ইমেইলে সাধারণত বানান ভুল, ব্যাকরণগত সমস্যা এবং অস্পষ্টতা থাকে। সতর্ক পাঠক হলে এসব চিহ্ন সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব।
চেনা প্রতারণার ধরন:
সাধারণত স্ক্যামাররা যেসব কৌশল ব্যবহার করে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ফিশিং ইমেইল, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স স্ক্যাম, পরিবারের সদস্য সেজে টাকা চাওয়া, অ্যাডভান্স ফি প্রতারণা, ভুয়া টেক সাপোর্ট, ভুয়া ই-কমার্স সাইট, জাল অ্যান্টিভাইরাস, এমনকি 'ক্রেডিট কার্ড উদ্ধার' প্রতারণা।
কী করবেন প্রতারণার শিকার হলে?
যদি কোনো অনলাইন স্ক্যামের শিকার হন, তাহলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করে লিখিত অভিযোগ জানান। এতে ভবিষ্যতের বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
সতর্ক থাকুন, নিরাপদ থাকুন:
শুধু সচেতনতা দিয়েই প্রতারণা ঠেকানো সম্ভব নয়। অনলাইন প্রতারণা শনাক্ত করার কৌশল জানা এবং তা বাস্তবে প্রয়োগ করাই হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তার প্রথম ধাপ।
আলীম
