
ছবিঃ সংগৃহীত
বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে একই গাছের দুটি ডাল বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। তিনি বলেন, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দুর্নীতি সবই আগের মতোই চলছে। আগে আওয়ামী লীগ করত, এখন বিএনপি করছে। শুধু হাত বদল হয়েছ।
রোববার (২২ জুন) বিকেলে লালমনিরহাটের কালেক্টরেট মাঠে আয়োজিত ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ লালমনিরহাট জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, “বিগত ৫৩ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা আমাদের জনগণকে কলুর বলদ বানিয়ে নিজেরা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। এখন যারা বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত, তারাও সেই একই পথে হাঁটছে। একটা ওয়ার্ডের সভাপতি হয়েও কেউ কেউ কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “এই দেশের ভোটারদের আচরণেও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্নীতিবাজরা জেলে যাওয়ার পরও যখন জনগণ তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে, তখন দুর্নীতির সংস্কৃতি উৎসাহ পায়। যদি তারা ফুলের মালা না দিয়ে জুতার মালা দিত, তাহলে দুর্নীতি অনেকটা কমে যেত।”
চরমোনাই পীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বিএনপির মধ্যেও কেউ ভালো থাকলেও সে ভালো থাকতে পারে না। চাঁদাবাজদের সঙ্গে থাকতে থাকতে সেও চাঁদাবাজ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ যা করেছে, এখন বিএনপি তা-ই করছে। যেটা আওয়ামী লীগ সাহস করেনি, সেটাও এখন হচ্ছে। সম্প্রতি লালমনিরহাটে হালকা জিকিরও বন্ধ করে দিয়েছে জালেমরা বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আলেমদের ওপর আঙ্গুল তুললে, কোরআন-হাদিস নিয়ে খেলা করলে, সাধারণ মানুষই বাংলার জমিন থেকে এই জালেমদের তাড়িয়ে দেবে ইন-শাহ-আল্লাহ। ফেরাউন টিকতে পারেনি, নমরুদ টিকতে পারেনি, আপনারাও পারবেন না।”
বিএনপি-আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চরিত্র নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, শপথ পাঠের আগেই চেয়ারে বসে যাওয়া পৃথিবীর আর কোথাও নেই। বিচারপতি সিনহার সঙ্গে যেভাবে আওয়ামী লীগ আচরণ করেছিল, আজ বিএনপিও একই কায়দায় বিচারপতিদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তাহলে এদের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়?”
চরমোনাই পীর বলেন, “এই জাহেল, মূর্খ, বেয়াদব রাজনীতিকরা জানে না জিয়াউর রহমান কাদের নিয়ে রাজনীতি করেছেন, কাদের প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন। তারা ভুলে গেছে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে যদি সঠিকভাবে কাজে লাগানো যেত, তাহলে গোটা দুনিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে এক নম্বরে চলে যেত। কিন্তু বিএনপি ও আওয়ামী লীগের লুটপাট, চাঁদাবাজি আর ক্ষমতার অপব্যবহার সেই সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।”
গণসমাবেশ থেকে তিনি জুলাই মাসে সংঘটিত ‘গণহত্যার’ দৃষ্টান্তমূলক বিচার, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা, দুর্নীতিবাজ ও অর্থপাচারকারীদের বিচারের মাধ্যমে রাজনীতি থেকে অযোগ্য ঘোষণা, নারী কমিশনের মতো ‘ইসলাম ও সমাজবিরোধী’ প্রতিষ্ঠান বাতিল, সংখ্যানুপাতিক ভিত্তিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু এবং ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবি জানান বক্তারা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লালমনিরহাট জেলার এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির লালমনিরহাট জেলা সভাপতি হাফেজ আজহারুল ইসলাম। এসময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও ধর্মপ্রাণ মানুষ এতে উপস্থিত ছিলেন।
ইমরান