
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, বিএনপি’র কাছে নিজেদের দলের লোক নিরাপদ নয়। এক বিএনপি আরেক বিএনপিকে খেয়ে ফেলছে। তাদের ছাত্র সংগঠন মূল দলের কাছে চাঁদা না পেয়ে নেতাদের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। যাদের কাছে নিজেদের দলের মানুষ নিরাপদ না, তাদের কাছে দেশের কোন মানুষ নিরাপদ হতে পারে না।
শুক্রবার (২০ জুন) প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ইসলামী আন্দোলন রংপুর মহানগর আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, যে দলের একটি অঙ্গসংগঠনকে অপর অঙ্গসংগঠনকে চাঁদা দিতে হয়, তাদের কাছে কোন ব্যবসায়ী নিরাপদ হতে পারে না। যে দলের মানুষ খুন করে, সেই দলের কাছে কোন মানুষের জানমাল নিরাপদ থাকতে পারে না। বিএনপি কাউন্সিল করতে পারে। যে দল শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পারে না, তাদের মাধ্যমে দেশের মানুষ শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে পারে না। তারা নিজেরাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে চায়। যারা মেয়র হওয়ার আগেই সিটি কর্পোরেশন ভবন দখল করে, তাদের হাতে দেশের মানুষের জানমাল, ইজ্জত নিরাপদ থাকতে পারে না।
তিনি বলেন, দেশের নতুন ভোটার শতকরা ৩৮ ভাগ। তারা জানে না ধানের শীষ কী জিনিস। তারা জিয়াউর রহমানের আদর্শ শুনতে চায় না। নতুন ভোটারদের কাছে তারা কী জিয়াউর রহমানের আদর্শ চাঁদাবাজি, খুন করা, অবৈধ দখল, জুলুম, অত্যাচার করা শোনাবে? পত্রিকায় এসেছে ইশরাক সাহেবের পক্ষে রায়ের জন্য বিচার বিভাগকে চাপ দেওয়া হয়েছে। জোর করে তারা নিজেদের পক্ষে রায় দিয়েছে। যারা জোর করে নিজেদের পক্ষে রায় আনে, তাদের হাতে বিচার বিভাগ নিরাপদ হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আবু সাঈদ কতবার জন্ম নেবে? কতবার রক্ত দেবে? অবৈধ ব্যক্তি ও চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আনার জন্য আমরা আর এক ফোঁটা রক্ত দিতে চাই না। খুনি, চাঁদাবাজদের আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না। দেশের মানুষ ইনসাফ, আল্লাহভীরুদের ক্ষমতায় আনতে চায়। কারণ তাদের হাতে অবৈধ খুনের রক্ত নেই, তারা ধর্ষণ-ইভটিজিং করে না।
এ সময় জুলাই গণহত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার, সকল আহতদের দ্রুত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা, দুর্নীতিবাজ ও অর্থপাচারকারীদের বিচার নিশ্চিত করে জাতীয় রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা, ইসলাম, দেশ ও সমাজবিরোধী অনৈতিক নারী কমিশন বাতিল, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে যৌক্তিক দ্রুততম সময়ে সংশোধন করে সংখ্যানুপাতিক জাতীয় নির্বাচন ব্যবস্থা এবং ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে সুদ-ঘুষ, দুর্নীতিমুক্ত একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়।
ইসলামী আন্দোলন রংপুর মহানগরের সভাপতি মাওলানা হাফেজ আব্দুর রহমান কাসেমীর সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী অকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. হাফেজ এম হাসিবুল ইসলাম, সুলতান মাহমুদ, রংপুর জেলা সভাপতি এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু-সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা।
আফরোজা