
.
নানা চ্যালেঞ্জ থাকার পরও কোরবানি ঈদের পর গতি ফিরতে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে এবার এক লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে সারাদেশে। বিপুল পরিমাণ এই অর্থের লেনদেন দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই সময়ে প্রবাসীরা ঈদ উৎসব পালনে আত্মীয়-স্বজনের কাছে বড় অঙ্কের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। গবাদিপশু বেচাবিক্রিতে চাঙ্গা গ্রামীণ অর্থনীতি। একইসঙ্গে রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চামড়া শিল্প খাতে এখন সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। ট্যানারি মালিকরা প্রায় ৬০-৭০ ভাগ চামড়া এই সময়ে সংগ্রহ করে থাকেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোরবানি
হলো বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক তৎপরতা, যা জাতীয় অর্থনীতির চাকায় আরও গতি সঞ্চার করেছে।
এ বছর ৯০ লাখের বেশি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে সারাদেশে। মূলত এই সময়ে পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করেই অর্থনীতির নানা কর্মযজ্ঞ শুরু হয়, যা চলতে থাকে কয়েক মাস পর্যন্ত। সাভারের ট্যানারি এবং পোস্তার আড়তদার ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন চামড়া বেচাকেনা ও সংগ্রহে। প্রতিবছর শুধু ফিনিশড চামড়া বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১৫০ কোটি ডলার। এর পাশাপাশি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বিশাল রপ্তানি বাজার তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ বাজারেও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে দিনদিন। একই সঙ্গে দেশীয় গরুতে কোরবানি হওয়ায় দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা লাভবান হচ্ছেন। গরু-ছাগল, ভেড়া ও মহিষ লালন-পালন করে কোরবানির সময় বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে কোরবানি ঈদে খামারিদের হাতে নগদ অর্থ থাকায় চাঙ্গা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। গরু- বেচাকেনার অর্থ পুনঃবিনিয়োগ হচ্ছে পশু উৎপাদন ও লালন-পালনে। ফলে গ্রামীণ এই শিল্পে কর্মসংস্থানের বড় সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
এর সঙ্গে যুক্ত হয় মসলার বিরাট বাজার। কোরবানির সময় সব ধরনের মসলার চাহিদা ও বিক্রি বাড়ে। ইলেক্ট্রনিক্স খাতের ফ্রিজ উৎপাদনকারীরা এই ঈদে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য করে থাকে। সারাদেশে বিপুল পরিমাণ ফ্রিজের চাহিদা তৈরি হয়-যার বাজার মূল্য প্রায় কয়েকশ’ কোটি টাকা। কোরবানির পশুর খাবার, জবাই করার ছুরি-চাকু, মাংস কাটার সরঞ্জামাদি, কোরবানির পশুর মাংস কাটা ও বণ্টনের জন্য কর্মীদের আয়-রোজগার, কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়-বিক্রয়সহ নানা অর্থনৈতিক কর্মকা- পরিচালিত হয়। মসজিদ, মাদ্রাস এতিমখানা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোরবানির সময় দানকৃত চামড়া সংগ্রহ ও তা বিক্রি করে অর্থ পেয়ে থাকেন। এই অর্থে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক সক্ষমতা বেড়ে যায়।
সব মিলিয়ে এক বিরাট অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ে কোরবানিকেন্দ্রিক অর্থনীতির প্রভাবে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে কোরবানির অবদান অনস্বীকার্য। কোরবানির আগে ও পরে কোরবানির ঈদকে উপলক্ষ করে হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। আর এ মহা কর্মযজ্ঞকে কেন্দ্র করে লাখো-কোটি মানুষের অস্থায়ী কর্মসংস্থান এবং আয়-রোজগারের ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়। এর মাধ্যমে দেশের জিডিপিও সমৃদ্ধ হচ্ছে।
গত কয়েক বছর ধরে ঈদের অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুঈদ রহমান।
তাঁর মতে, কোরবানির ঈদের অর্থনীতি এখন এক লাখ কোটি টাকার কম হবে না। ঈদসহ যেকোনো উৎসবেই বাংলাদেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। কিন্তু কোরবানির ঈদের বিশেষত্ব হলো গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। এর সঙ্গে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়ে যায়। আমাদের চামড়া শিল্পের প্রায় ৫০ শতাংশ এই সময় সংগ্রহ করা হয়। আর মানসম্পন্ন চামড়ার প্রায় শতভাগই এই সময়ে পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, এখন গরুর ফেলে দেওয়া নাড়ি-ভুঁড়িসহ বিভিন্ন অংশও বিদেশে রপ্তানি হয়। প্রতিবছর এখন প্রায় সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকার এই ধরনের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রতিবছর ঈদুল আজহায় বছরে উৎপাদিত মোট চামড়ার প্রায় ৬০ শতাংশ সংগৃহীত হয়। চামড়া শিল্প দেশের প্রধান রপ্তানি খাতগুলোর অন্যতম। আয়ের দিক থেকে দেশে তৈরি পোশাক খাতের পর দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানি পণ্য হলো চামড়া। শিল্প আয়ে এ খাতের অবদান ২ শতাংশ আর রফতানির ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। দেশীয় জিডিপিতে চামড়া শিল্পের অবদান প্রায় শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ। কোরবানির ওপর ভর করেই টিকে আছে বিপুল সম্ভাবনার এ খাতটি। বাংলাদেশ থেকে ইতালি, নিউজিল্যান্ড, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জার্মানি, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করা হয়।
তাছাড়া কোরবানির সময় চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতে প্রায় হাজার কোটি টাকার ব্যবসা জড়িত। লবণ হলো চামড়া সংরক্ষণের অন্যতম উপাদান। চামড়া সংরক্ষণে প্রয়োজন হয় বিপুল জনবলের। এ সময় শ্রমিকরা পান তাদের শ্রমের চড়া মূল্য। দেশের বিভিন্ন স্থানে চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতেও লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হয়। এ ছাড়া কোরবানির বর্জ্যওে অর্থনীতির বিপুল সম্ভাবনার কথা বলছেন গবেষকরা। কোরবানির ঈদে বর্জ্য হিসেবে হাড়, শিং, নাড়িভুঁড়ি, পেনিস, মূত্রথলি, রক্ত, চর্বি, পিত্ত ও চামড়ার ওয়েস্টেজ অংশ ফেলে দেওয়া হয়। এসব উচ্ছিষ্ট শতভাগ রপ্তানিযোগ্য। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শহীন আহমেদ জানান, এবার কোরবানির ঈদে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কোরবানির চামড়া সংগ্রহ করা যাবে বলে ট্যানারি মালিকরা আশা করছেন। ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোর চামড়া ইতোমধ্যে ট্যানারিতে এসে গেছে। এছাড়া জেলা পর্যায়ের চামড়াও আশা শুরু হয়েছে। ট্যানারি মালিকরা কয়েকমাস পর্যন্ত এসব চামড়া সংগ্রহ করবেন।
গরুর হাড় দিয়ে তৈরি হয় জীবন রক্ষাকারী ক্যাপসুলের কভার। নাড়ি দিয়ে তৈরি হয় অপারেশনের সুতা। চর্বি দিয়ে সাবান। নাড়িকোষ দিয়ে তৈরি হয় জাপানের জনপ্রিয় খাবার সুসেড রুল। পেনিস দিয়ে তৈরি হয় সুপ, যা বিভিন্ন দেশে অভিজাত খাবার হিসেবে বিবেচিত। এর দামও বেশি। এভাবেই পশুবর্জ্য মানুষের কোনো না কোনো কাজে ব্যবহৃত হয়। এগুলো রপ্তানি করলে শতকোটি টাকা আয় করা সম্ভব। শুধু তা-ই নয়, বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোরবানির বর্জ্য দিয়ে উৎকৃষ্ট জৈবসার তৈরি করা যাবে, যা মাটির উর্বরতা বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। ছাগল, ভেড়া, মহিষের উচ্ছিষ্টাংশ ব্যবহার করে দেশের পশু ও মৎস্য খাদ্যের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা যায়।
এ প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের কৃষিবিদ ও গণযোগাযোগ কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম জানান, অর্থনীতির চাকা সচল রাখার বিপুল সম্ভাবনার উৎস এ কোরবানির ঈদকে শতভাগ সফল করতে করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বিপুল পরিমাণ ভালোমানের চামড়া সংগ্রহ করা গেছে। সরকারের নানামুখী উদ্যোগে বাংলাদেশ এখন গরু-ছাগল তথা মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এতে করে দেশীয় গবাদিপশু দিয়েই দেশের কোরবানির চাহিদা একদিকে যেমন মেটানো যাচ্ছে, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির চাকাও সচল হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ধর্মীয় উৎসব জাতীয় অর্থনীতির একটি বিশাল জায়গা দখল করে আছে। ধর্মীয় উৎসবেরও একটি অর্থনৈতিক মূল্য আছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহাকেন্দ্রিক কোরবানির উদ্দেশ্য বাণিজ্যিক না হলেও অর্থনীতিতে এর ভূমিকা ব্যাপক। কোরবানি উপলক্ষে যে লেনদেন হয়, অর্থনীতিতে তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কোরবানিতে গরু অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে অর্থের সরবরাহ বাড়ায়। গ্রামের পশু শহরে আসে। শহরের টাকা গ্রামে যায়। এসময়ে প্রবাসী আয়ও বেশি আসে। আর কোরবানির গরুর উৎপাদন মূলত গ্রামকেন্দ্রিক। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কোরবানির ঈদ বড় ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য অন্যতম পণ্য হলো পশুর চামড়া। অংকে এর পরিমাণ ১৫০ কোটি ডলার। এর অভ্যন্তরীণ বাজার প্রায় ২০০ কোটি ডলারের। তাই সম্ভাবনা খাত হিসেবে বিবেচনা করে ২০১৭ সালে চামড়াকে ‘বার্ষিক পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। এ বৃহৎ শিল্পের অধিকাংশ সংগ্রহই হয়ে থাকে কোরবানির সময়। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে পুরো বছর যে গরু জবাই হয়, এর প্রায় অর্ধেকই হয়ে থাকে কোরবানির সময়। বিটিএ’র তথ্যমতে, বছরে মোট চামড়া সংগ্রহ হয় ২২ কোটি বর্গফুট। এর মাঝে ১০ কোটি বর্গফুটই সংগ্রহ হয় কোরবানির মৌসুমে।
বিশ্ববাজারে এ দেশের সব ধরনের চামড়ার চাহিদা রয়েছে। বিশ্বে প্রথম শ্রেণির চামড়া ও চামড়াজাত প্রস্তুতকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বে চামড়া খাতে রপ্তানির শতকরা দুই ভাগ হচ্ছে বাংলাদেশের। চামড়াজাত সামগ্রী তথা জুতা, স্যান্ডেল, জ্যাকেট, মানিব্যাগ, ওয়ালেট ব্যাগ ইত্যাদি রপ্তানি করে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে থাকে। যা সামগ্রিক অর্থনীতিতে বেশ ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে প্লটের সংখ্যা ২০৫টি, শিল্প ইউনিটের সংখ্যা ১১৫টি, চালু ট্যানারি সংখ্যা ১২৩টি। এসব প্রতিষ্ঠানে ৬ লাখের অধিক মানুষ কর্মরত রয়েছেন। তাদের অর্থনৈতিক জীবন নির্ভর করে এ চামড়া শিল্পের ওপর।
এছাড়া রমজানের পর কোরবানি ঈদেও চাঙ্গা রেমিটেন্স। ঈদের আগে গত মে মাসে প্রবাসীরা ২৯৭ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি। আর একক কোনো মাসে এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে গত রোজার ঈদের আগে মার্চ মাসে। মূলত অর্থ পাচার কমে যাওয়ায় হুন্ডি চাহিদা কমে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় এভাবে বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে পর্যন্ত ১১ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৭৫১ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার। এর মানে ১১ মাসে বেশি এসেছে ৬১৩ কোটি ডলার বা ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেমিটেন্সের জোয়ার বইছে। শুধু তাই নয়, রেমিটেন্সের এই উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর ড. আহসান এইচ মুনসুর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠান শেষে জানান, অর্থনীতি সূচকগুলো ক্রমেই ভালো হচ্ছে। বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স আসছে। আগামী দিনেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ধীরে ধীরে রপ্তানি বাড়ছে এবং এই খাতে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পাস হওয়ার পর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি আরও কমে আসবে বলে আশা করছি।
প্যানেল